অর্থনীতিতে ফের নোবেল এসেছে বাঙালির ঘরে। সোমবার দুপুরেই নোবেল কমিটি ঘোষণা করে বঙ্গসন্তান অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। তবে তাঁর পাশাপাশি নোবেল পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী এস্থার ডাফলোও।খুশিতে ভাসছে গোটা বাংলা।সাউথ পয়েন্ট স্কুল থেকে প্রেসিডেন্সি কলেজ। কলকাতাতেই জড়িয়ে রয়েছে নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্কুল আর কলেজবেলা।
তাঁর নোবেল জয়ের খবরে তাই গর্বিত, উচ্ছ্বসিত, মহা–আনন্দিত সাউথ পয়েন্ট এবং প্রেসিডেন্সি।
১৯৭৮ সাল পর্যন্ত সাউথ পয়েন্টে পড়তেন অভিজিৎ। চোখে বড় চশমা, খেলাধূলা থেকে সিনেমা সবদিকেই একইভাবে আগ্রহ ছিল তাঁর। স্কুলের বন্ধুরা তাঁর নাম দিয়েছিল তাই, ‘শিয়াল পণ্ডিত’। গতকাল নোবেল প্রাপক হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁর বন্ধুরা। অভিজিৎ-এর স্কুলের ২ বছরের সিনিয়র রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে লিখেছেন, “ আমার ছাতির মাপ এখন ১১২ ইঞ্চি। স্কুলে ওর নাম ছিল শেয়াল পণ্ডিত। তখন থেকেই জানা উচিৎ ছিল ও একদিন নোবেল পাবে। একসময় স্কুলে ওকে অনেক র্যাগিং করেছি আশা করি সেসব ও ভুলে গেছে। অনেক শুভেচ্ছা ওর জন্যে”।
তাঁর সহপাঠী এবং বন্ধু তথ্যচিত্রকার বাপ্পা সেন জানাচ্ছেন, “ স্কুল ছুটির পরে যখন ঢাকুরিয়া লেক বা গোলপার্কে আড্ডা চলত তখন সেখানে অন্যান্য স্কুলের ছাত্ররাও আসত, সেখানেও ওর শেয়াল পণ্ডিত নামটা ফেমাস ছিল। আজ খুব আনন্দ হচ্ছে ওর জন্যে”।
অভিজিৎবাবু বলেছেন, “বাঙালি হিসেবে গর্বিত।” অর্মত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে উঠলে এমআইটি-র গবেষক বলেন, “অর্মত্য সেনের পর দ্বিতীয় হওয়াটা সত্যিই একটা মর্যাদার। আলো ভালো কাজ করতে চাই।” তিনি স্পষ্ট জানান, নোবেল পাওয়ার কথা কল্পনাতেও ছিল না তাঁর। বলেন, “মানুষ বয়স হলে এধরনের পুরস্কার পায়। ৬০ বছর বয়সের পর তবু মানুষ এধরনের পুরস্কারের ব্যাপারে ভাবতে পারে। আমার তো সবে ৫৮ বছর। আর আমার স্ত্রী সবে ৪৭ বছর।” তিনি আরও জানাচ্ছেন, “খুব সকাল সকাল খবরটা এসেছিল। আর আমি একেবারেই সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়ার মানুষ নই। বরং আমার রোজের সিস্টেমের সঙ্গে এটা একেবারেই যায় না। তাই খবরটা পাওয়ার পরেই ঘুমোতে চলে গিয়েছিলাম। পুরস্কার পাওয়ার পর প্রথম বাবার কথাই মনে পড়ে। বাবা থাকলে খুব ভালো লাগত”।
ও শুধু আমার ছেলে নয়, সবার ছেলে, দেশের ছেলে। আমি ওর গর্বে গর্বিত। ও যে কাজই করে, সেটা ভালোবেসে করে। আমি আমার ছেলে বলে বলছি না, ও নিজের বইয়ে দারিদ্র্যকে জয় করার মধ্যে দিয়েই মানুষ কীভাবে লড়াই করে জীবনযাপন করবে, তা নিঁখুত ও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। অর্থনীতিতে নোবেল জয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে এভাবেই মত ব্যক্ত করলেন মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়।