অর্থনীতিতে তাঁর নোবেল প্রাপ্তির দিনেই ভারতের চলতি অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অধ্যাপক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। নোবেল কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কয়েক প্রহর পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে ভারতীয় অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা টলোমলো। বেশ খারাপ জায়গায় রয়েছে। এমন মন্দগতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক’।
প্রতি দেড় বছর অন্তর ভারতে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের রিপোর্ট পেশ হয়। যেখানে ভারতের শহর ও গ্রামীণ এলাকার গড় খরচের সম্ভাব্য তালিকা তুলে ধরা হয়। ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের সাম্প্রতিক তথ্যের কথা উল্লেখ করে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০১৪-১৫ সাল থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে এই গড় খরচের হার কমছে। এবং বহু বছর পর ভারত এই ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে যা সতর্কতামূলক সংকেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পাশাপাশি, কেন্দ্রের প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য নিয়েও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন নোবেল জয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে এক সাঙ্ঘাতিক যুদ্ধ চলছে, তা হল কোন তথ্য সঠিক এবং কোনটা ভুল। এবং সরকারের কাছে যে তথ্য অস্বস্তিজনক বলে মনে হয় তাকে ভুল বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে’।
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘খুব দ্রুত ভারতের অর্থনৈতিক মন্দা তীব্র হচ্ছে। তবে এই মন্দা ঠিক কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তা বলা মুশকিল। কারণ সরকারি তথ্য নিয়েই বিভ্রান্তি রয়েছে। তবে এটুকু বলা যায়, আর্থিক পরিস্থিতি বেশ টলোমলো’। তাঁর কথায়, ‘মোদ্দা ব্যাপার হল, কোনও নীতি বাস্তবায়নের আগে তা গভীর ভাবে হয়তো পর্যালোচনাই করা হয় না। প্রধানমন্ত্রী কিছু একটা বলে দেন। ব্যস, ওটাই বাস্তবায়িত করা হয়’।
তবে মনমোহন সরকারের কিছু প্রকল্পের এ দিন প্রশংসাও করেছেন সদ্য নোবেল জয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে রোজগার গ্যারান্টি তথা একশো দিনের কাজের প্রকল্পের রূপায়ণ যে দেশের দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়ক হয়েছে, তা মেনে নেন। তিনি বলেন, ‘একশো দিনের প্রকল্পের ফলে মানুষের শুধু তা থেকে আয়ই বাড়েনি, ওই প্রকল্পের রূপায়ণের জন্য ন্যূনতম মজুরিও বেড়েছে’।