দিন কয়েক হল শেষ হয়েছে পুজো। তবে তাতে কী? শারদোৎসবে ইতি ঘটলেও এবার এক ‘অন্য’ উৎসবে মেতে উঠলেন পাহাড়ের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দার্জিলিঙের চা বাগানের জট খুলতে শুক্রবার ছুটির দিনেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছিল রাজ্য সরকার। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, টিটিআইএনটিইউসি নেত্রী দোলা সেনের উপস্থিতিতে চা বাগানের মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা সর্বসম্মত ভাবে চুক্তি সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, ২০ শতাংশ বোনাস পাবেন দার্জিলিঙের চা শ্রমিকেরা। যে দাবিই এতদিন করে আসছিলেন শ্রমিকরা।
কলকাতায় নিউ সেক্রেটারিয়েটে চুক্তি স্বাক্ষরের পর অনশন তুলে নেন বিনয় তামাং। তিন পক্ষই খুশি। সকলেই মনে করেলছেন, দার্জিলিঙের চা শিল্পে শান্তি ফিরিয়ে আনার কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রীরই। পুজোর আগেই ডুয়ার্সের চা বাগানগুলিতে বোনাস হলেও দার্জিলিঙে হয়নি। পুজোর আগে ভেস্তে যায় একাধিক দ্বিপক্ষ ও ত্রিপক্ষ বৈঠক। ঠিক ছিল, ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে ১৭ অক্টোবর। এরই মধ্যে ২০ শতাংশ বোনাস দাবি করে অনশনে বসেন বিনয় তামাং। শুরু হয় যৌথ আন্দোলন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত বৈঠকের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর নির্দেশেই গতকাল সকাল ১১টা থেকে ৫ ঘণ্টার বৈঠকে বেরিয়ে আসে সমাধান সূত্র। পাহাড়ের চা বাগান শ্রমিকেরা পাবেন ২০ শতাংশ বোনাস। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও এটাই চাইছিলেন। বৈঠক শেষে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, তিনি খুশি। কারণ সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই চুক্তি হয়েছে। তিনি জানান, চুক্তি অনুযায়ী ১২ শতাংশ বোনাসের টাকা দেওয়ালির আগেই দেবেন মালিকেরা। বাকি ৮ শতাংশ পরে। নভেম্বরে ফের বৈঠক হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই শ্রমিকেরা ২০ শতাংশ বোনাস পাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
খুব ভাল চুক্তি হয়েছে বলে মনে করেন শ্রমিক নেত্রী দোলা সেনও। তাঁর দাবি, পুরো কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রীর। বললেন, ‘২০১১ সালের আগে কেউ ভাবতেও পারেননি ২০ শতাংশ বোনাসের কথা। চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৬৭ টাকা থেকে বর্তমান সরকারের আমলে ১৭৯ টাকা করা হয়।’ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অরিজিৎ রাহাও সর্বসম্মত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। খুশি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাও।