এতদিন অঙ্কটা ছিল খুবই সহজ। জিএসটি যোগ করে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিহীন সিলিন্ডার আর ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের মধ্যে দামে যত টাকার ফারাক টাকা ছিল, পুরো দামে সিলিন্ডার কেনার পরে সেই পরিমাণ টাকাই ভর্তুকি হিসেবে জমা পড়ত ভর্তুকি প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এবং এক্ষেত্রে তাঁদের সকলের ক্ষেত্রে ভর্তুকির অঙ্কও হত একই।
কিন্তু গত মাসে গ্রাহকদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে একপ্রকার চুপিসারেই মধ্যবিত্তের রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ২০ টাকা কমিয়ে দিয়েছিল মোদী সরকার। শুধুমাত্র উজ্জ্বলা যোজনায় যাঁরা গ্যাস পান, তাঁদের ক্ষেত্রে ভর্তুকির অর্থ একই ছিল। এবার আশঙ্কা, উজ্জ্বলা যোজনা ব্যতীত আর কোনও গ্রাহকই কোনও ভর্তুকি পাবেন না।
প্রসঙ্গত, যে সব এলপিজি গ্রাহক সিলিন্ডারে ভর্তুকি পান, তাঁদের বাজার দরে গ্যাস কিনতে হয়। পরে ভর্তুকির টাকা তাঁদের নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। কিন্তু, পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে ভর্তুকিহীন গার্হস্থ্য রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬১৬.৫০ টাকা। যা গত মাসের চেয়ে ১৫.৫০ টাকা বেশি। তবে গ্যাসের দাম বাড়লেও যাঁরা সিলিন্ডারে ভর্তুকি পান, সিলিন্ডার নেওয়ার পর তাঁদের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি বাবদ কোনও অর্থ জমা পড়বে না।
তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী সংস্থার তরফে, ইন্ডিয়ান অয়েলের পক্ষ থেকে শনিবার জানানো হয়েছে, কলকাতায় ভর্তুকিবিহীন সিলিন্ডারের দাম রবিবার থেকে ৬১৬.৫০ টাকা হলেও যে সব সাধারণ গ্রাহক গ্যাসে ভর্তুকি পান, তাঁরা সেপ্টেম্বরে আর কোনও ভর্তুকি পাবেন না। ১৯ কিলো নন-ডমেস্টিক গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ৫১ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১৪.৫ টাকা। ভর্তুকিবিহীন ৫ কিলো গার্হস্থ্য এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৫.৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ২২৯ টাকা।
আর ইন্ডেন ডিস্ট্রিবিউটার অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি বিজন বিশ্বাস সোমবার জানিয়েছেন, ‘গ্রাহকদের এখন থেকে পুরো দাম দিয়ে আগের মতোই সিলিন্ডার নিতে হবে। তারপর অপেক্ষায় থাকতে হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি আসছে কি না তার জন্য। যদি ভর্তুকির টাকা না আসে, ধরে নিতে হবে যে ওই গ্রাহক ভর্তুকি–যোগ্য নন। এটা যদি হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে নিঃশব্দে ভর্তুকি প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নেওয়া হল।’