জীববৈচিত্র্যে ভরপুর ব্রাজিলের অ্যামাজন বৃষ্টি-অরণ্য। টানা তিন সপ্তাহ ধরে জ্বলছে পৃথিবীর ফুসফুস। আমাজন বৃষ্টি-অরণ্যকে, যার দুই-তৃতীয়াংশই ব্রাজিল সীমান্তের মধ্যে। সেই অংশটারই সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই লাগাতার দাবানলে প্রচুর প্রাণীরও প্রাণহানি ঘটছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –
সবুজ অ্যানাকোন্ডা নামক নির্বীষ সাপটি নরখাদক নামে পরিচিত। অ্যামাজনের বাসিন্দা। কোনও বিষ নেই এদের, তবে একবার শিকারকে ধরলে এর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া প্রায় অসম্ভব। শ্বাসরোধ করে শিকারকে মেরে ফেলার পর গিলে নেয় এরা।
অ্যামাজনের বিশালাকার হলুদ পায়ের বিছের দৈর্ঘ্যে এক ফুট। কোনওটা তারও কিছুটা বেশি। এই বিছের খাদ্য তালিকায় গিরগিটি, সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, বাদুর এমনকি পাখিও রয়েছে। শিকার ধরে প্রথমেই তার রক্তে মারাত্মক বিষ ঢুকিয়ে দেয় এরা।
আমাজনের জঙ্গলে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে ভয়ের কারণ মশা। পীত জ্বর, ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী জীবাণু এই মশা মানুষের শরীরে ঢুকিয়ে দেয়।
ওয়্যান্ডারিং স্পাইডার নামে এক ব্রাজিলিয়ান মাকড়সা অ্যারাকনিড শ্রেণির সবচেয়ে বিষধর। এমনকি এই মাকড়সার গ্রিক ভাষায় বিজ্ঞানসম্মত নাম ফোনিউট্রিয়া-র অর্থই খুনি। আকারে ছোট এই মাকড়সাকে ওয়্যান্ডারিং স্পাইডার বলার কারণ গাছে গাছে জাল বোনার বদলে রাতে জঙ্গলের মাটিতে ঘুরে বেড়ায় শিকারের জন্য। ১৯৯৬ সালে এর বিষের অ্যান্টিডোট আবিষ্কার হয়।
শুধু জঙ্গলের মধ্যেই নয়, আমাজনের নদীও ভয়ঙ্কর সব জীবে ভর্তি। তাদের অন্যতম এই ইলেক্ট্রিক ইল। এই মাছ বিদ্যুৎ তৈরি করে। তার একটা ঝটকাতেই একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শ্বাসরোধ করে দিতে পারে। ইল মূলত শিকারের কাজেই লাগায় এই দক্ষতা।
অ্যামাজন নদীতে প্রচুর সংখ্যক পিরানহা মাছ রয়েছে। নরখাদক বলে পিরানহার বদনাম রয়েছে। এই মাছের দাঁত এত ধারালো এবং চোয়াল এতটাই শক্ত যে মানুষের অঙ্গ অনায়াসে কেটে নিতে সক্ষম এরা। তবে পিরানহা জ্যান্ত মানুষ খেয়েছে এমন কোনও তথ্য এখনও নেই।
ছোট এবং হলুদ রঙের অত্যন্ত আকর্ষণীয় ব্যাঙের দেখা মেলে অ্যামাজন জঙ্গলে। বিশ্বের বিষাক্ততম প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম বলা চলে ডার্ট ফ্রগকে। বিপদ বুঝলেই এদের হলুদ চামড়া থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়। যা খুব কম মাত্রায় রক্তে মিশলে পক্ষাঘাত হতে পারে।