চাঁদের কক্ষপথে পা ছোঁয়াল ‘চন্দ্রযান-২’। ইসরোর বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা এতগুলো দিন প্রাণপণ চেষ্টার পর আজ সফলতার প্রথম ধাপে পৌঁছলেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টা ২৮ মিনিটে। চাঁদের কক্ষপথে চন্দ্রযান-২-কে ঢোকাতে সময় লেগেছে ১৭৩৮ সেকেন্ড বা ২৮ মিনিট ৯৬ সেকেন্ড। গত ১৪ অগস্ট পৃথিবীর কক্ষপথকে শেষ বারের মতো ‘গুড বাই’ জানিয়েছিল চন্দ্রযান-২। তার পর সাত দিন ধরে সোজা পথ পেরিয়ে চন্দ্রযান-২ চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়ল আজ। ইসরো সূত্রে এই খবর জানানো হয়েছে।
যে ভয়ঙ্কর গতিবেগে ছুটে চলেছে চন্দ্রযান-২ (ঘণ্টায় ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার গতিবেগে) তাতে তার গতি কমিয়ে নিরাপদে তাকে চাঁদের কক্ষপথে ঢোকানোটাই ছিল ইসরোর বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উৎক্ষেপণের পর থেকেই যে গতিবেগ ধীরে ধীরে কমিয়েছে ইসরো। কারণ, উৎক্ষেপণের সময় ‘জিএসএলভি-মার্ক-৩’ রকেটের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩৯ হাজার ২৪০ কিলোমিটার।
কক্ষপথে ঢোকার আগে চন্দ্রযান-২-এর গতিবেগ না কমালে যেমন তা চাঁদের পাশ কাটিয়ে সৌরমণ্ডলের সুদূরতম প্রান্তে চলে যেতে পারত, তেমনই চাঁদের পাঁচটি কক্ষপথে প্রদক্ষিণের সময় চন্দ্রযান-২-এর গতিবেগ ধীরে ধীরে কমিয়ে না আনলে তা এখনও আছঢ়ে পড়তে পারে চাঁদের বুকে। ফলে, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের বুকে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর পা ছোঁয়ানো পর্যন্ত যথেষ্টই উদ্বেগে থাকতে হবে ইসরোর বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের।
ইসরোর মিশন কন্ট্রোল রুম সূত্রের খবর, গত ২২ জুলাই, দুপুর ২টো ৪৩ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণের ১৬ মিনিটের মধ্যেই (দুপুর ২টো ৫৭ মিনিট নাগাদ বা তার কিছু পরে) চন্দ্রযান-২কে পিঠে চাপিয়ে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ‘জিএসএলভি-মার্ক-৩’ পৌঁছে যায় ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭০ কিলেমিটার উপরে। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে। আর সেই দিন থেকেই ইসরো বিজ্ঞানীদের চেষ্টা শুরু হয়ে যায় রিমোট কন্ট্রোলে ঠেলেঠুলে চন্দ্রযান-২কে আরও দূরের কোনও উপবৃত্তাকার কক্ষপথে (ইলিপটিকাল অরবিট) ঢোকানোর।