ভাগ্যের লিখন খন্ডানোর সাধ্য কারওরই নেই৷ তাই নিজের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আনন্দ করার পরিকল্পনা থাকলেও কফিনবন্দী হয়ে বাড়ি ফিরলেন কলকাতায় দুর্ঘটনার শিকার ফারহানা ইসলাম তানিয়া ও কাজী মহম্মদ মইনুল আলম৷
আচমকা এই বিপদে ভেঙে পড়েছেন কলকাতায় মইনুলের সঙ্গে যাওয়া খুড়তুতো ভাই কাজি শাহি রহমতউল্লাহ জিহাদ। কান্নায় ভেঙে পড়তে পড়তে বলছিলেন, ‘বাড়ি ফিরে কী মুখ দেখাব? ভাইকে ফিরিয়ে আনতে পারলাম না।’ মইনুল ঝিনাইদহের ভুটিয়ারগাতি গ্রামের আইনজীবী কাজি খলিলুর রহমানের ছোট ছেলে। তাঁরা তিন ভাই। বড়দা কাজি সাইফুল আলম বললেন, ‘ভাই মেধাবী ছাত্র ছিল। তার এক পুত্র আছে। কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে কী যে ঘটল!’ বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে মইনুলকে মাটি দেওয়া হয়।
মইনুলের মামাতো বোন তানিয়া। দুই বাড়িতেই শোকের আবহ৷ গতকাল সকালে বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্টে তানিয়ার দেহ নিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন খুড়তুতো ভাই আবু ওবায়েদ শাফিন। বলছিলেন, ‘কী করে কাকা–কাকিমাকে সান্ত্বনা দেব!’
কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার চাঁদট গ্রামের বাড়িতে শোকে কাতর তানিয়ার মা নুরুন নাহার পারভিন আর বাবা মুন্সি আমিনুল ইসলাম। দুই বোনের মধ্যে বড় ছিলেন তানিয়া। কর্মসূত্রে থাকতেন ঢাকায়। কলকাতায় ইদের ছুটি কাটিয়ে রবিবার তাঁর গ্রামের বাড়িতে ফেরার কথা ছিল। মায়ের জন্য কিনেছিলেন শাড়ি। সেই শাড়ি আর দেওয়া হল না।
শুক্রবার গভীর রাতে মিন্টো পার্কের কাছে এক প্রচন্ড গতিতে আসা জাগুয়ারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় তানিয়াদের৷ ঘাতক গাড়িটির চালক কলকাতার এক বিখ্যাত বিরিয়ানির ফুড চেনের মালিকের ছেলে৷ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে৷