এবার মাথায় হাত পড়ল ব্যঙ্ক কর্মীদের। গাড়ি বিক্রি না হওয়ায় ডিলাররা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে পারছেন না। ফলে আরও বাড়তে চলেছে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ। শুধু স্টেট ব্যাঙ্কের কাছেই গাড়ির ডিলারদের ১১,৫০০ কোটি টাকা দেনা রয়েছে। বাকি সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক ধরলে দেনার পরিমাণ আরও বেশি। তার মধ্যে কতখানি নির্দিষ্ট সময়ে শোধ হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যাঙ্ক-কর্তারা।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র হিসাব এপ্রিল-জুনে গাড়ি বিক্রি গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ২৩.৩ শতাংশ কমেছে। গাড়ি শিল্পে গত ১৫ বছরে এত খারাপ ছবি দুর্লভ। আর গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম-এর পরিসংখ্যান বলছে, শুধু জুলাই মাসে গাড়ির বিক্রি গত বছর জুলাইয়ের তুলনায় ৩১ শতাংশ কমেছে। গত ১৯ বছরে এমন হাল হয়নি বলে দাবি তাদের। ক্ষতি সামাল দিতে একাধিক গাড়ি নির্মাতা সংস্থা রাশ টেনেছে উৎপাদনে। বিক্রি কমায় স্বাভাবিক ভাবেই কমেছে গাড়ির জন্য নেওয়া ঋণের পরিমাণও।
স্টেট ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (রিটেল অ্যান্ড ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং) পি কে গুপ্তর ব্যাখ্যা, আমজনতা যেমন গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নেন, তেমনই ডিলাররাও কোম্পানি থেকে গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নেন। কিন্তু বিক্রি কমায় শো-রুমে গাড়ি জমছে। ফলে ঋণ শোধ হচ্ছে না। তার মধ্যে মারুতি, মাহিন্দ্রা-সহ কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা সংস্থা সরকারের কাছে ত্রাণ প্রকল্পের দাবি করেছে।
সরকার আরও ঋণ বিলি করতে বললেও তা শোধ না হওয়ার চিন্তা থাকছে। এমনিতেই সরকারি ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। মোদী সরকারের কাছে ব্যাঙ্কগুলির দাবি ছিল, ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ৫৯ মিনিটে ঋণ মঞ্জুরের প্রকল্প গাড়ি, বাড়ি এবং ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রেও চালু করা হোক। গত নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকঢোল পিটিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে, ৫৯ মিনিটে ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মঞ্জুরের প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছিলেন, অর্থনীতির ঝিমিয়ে পড়া দশা কাটাতে এ’টি ওষুধের কাজ করবে। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলির পর্যালোচনাতেই দেখা যাচ্ছে, ৫৯ মিনিটে ‘নীতিগত মঞ্জুর’ হয়ে গেলেও হাতে ঋণের টাকা পেতে দেরি হচ্ছে। কারণ অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ায় ব্যাঙ্কের কর্তারা ঋণ বিলির ক্ষেত্রে সাবধানী হয়েছেন। সব মিলিয়ে গাড়ির ধাক্কায় নাভিশ্বাস উঠছে ব্যঙ্কগুলির।