এই বছরে পরিমাণের তুলনায় কম বৃষ্টি ইতিমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং তামিলনাড়ু জেলায় জলকষ্ট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর অন্যতম কারণ হিসাবে দায়ী করা হচ্ছে বৃষ্টিপাতকে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। সমস্যা এড়াতে কেন্দ্র, রাজ্যগুলিকে অবিলম্বেই ভূগর্ভস্থ পানীয় জল সংগ্রহ করার দিকে নজর দিতে বলেছে।
জলসঙ্কট করাল ছায়া পড়েছে এরাজ্যেও। গ্রীষ্মের মরসুমের শুরুতেই তীব্র জলকষ্টের শিকার হয়েছেন পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মানুষ। এমন অবস্থায় প্রশাসন এই সংকট থেকে উদ্ধারের পথ খুঁজতে নড়েচড়ে বসেছে। নবান্নে তড়িঘড়ি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব মলয় দে-র পৌরহিত্যে প্রস্তবিত ওই বৈঠকে জলসম্পদ, সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পুর ও নগরোন্নয়ন, পঞ্চায়েত সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে রাজ্যের বর্তমান জলসঙ্কট ও তার মোকাবিলার পন্থা নিয়ে আলোচনা হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বর্তমান সারা দেশে চলা জলসঙ্কট জন্য বিশেষজ্ঞরা চলতি বছরের প্রাক বর্ষার বৃষ্টির ঘাটতিকেই দায়ী করছেন। কিন্তু সরকারের কপালের ভাঁজকে আরও চওড়া করেছে নীতি আয়োগের সদ্য প্রকাশিত একটি রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যেই তীব্র পানীয় জলের সঙ্কটে পড়তে চলেছেন ভারতের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ। ভারতের ইতিহাসে নাকি এত বড় জলকষ্ট এর আগে কখনও দেখা যায়নি। গত সপ্তাহে সংসদের যৌথ অধিবেশনের শুরুতে ভাষণেও জলসঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
একটি গবেষাণায় প্রকাশ হয়েছে, প্রতিবছর প্রায় ২০০,০০০ মানুষ মারা যাচ্ছেন কেবলমাত্র পর্যাপ্ত পানীয় জলের অভাবে এবং দূষিত ও অবিশুদ্ধ পানীয় জল পান করে। কর্পোরেট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ইনডেক্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এইভাবে পানীয় জলের সংকট দেখা দিলে ২০৩০-এর মধ্যে ভারতীয়দের কাছে এক বিন্দু পানীয় জলও আর পাওয়া যাবে না।