এনআরএস-এর জুনিয়ার চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে বেজায় খুশি বিজেপি ও বামপন্থীরা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনার সুযোগ পেয়ে গেছেন। কিন্তু বাম আমলে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ঘটনা ঘটেছিল। জ্যোতি বসুর শাসনে সেই সব চিকিৎসকেরা কিন্তু এমন ‘জামাই আদর’ পাননি। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে তাঁদের জেলে পুড়েছিল জ্যোতি বসুর সরকার।
এই প্রসঙ্গেই এবার মুখ খুললেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের ডাক্তার পুত্র বৈদ্যনাথ ঘোষ দস্তিদার। তাঁর কথায়, ‘এখন বাম এবং বিজেপির নেতারা বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন। সেইসব ডাক্তাররা যারা চাইছেন সাংসদ হয়ে মেডিক্যাল সমাজকে আরো সংকীর্ণ করে দিতে। বন্ধুরা অনুগ্রহ করে দেখে নিন ৮৩ সালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির সময় জ্যোতি বসু কি করেছিলেন, এবং কিছুদিন আগে আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এনআরএস প্রসঙ্গে কি বলেছিলেন তার তুলনামূলক বিচার করুন মানবিকতার মাপকাঠিতে। জ্যোতি বসুর পুলিশ সেদিন আন্দোলনরত ডাক্তারের শুধু চোয়াল নয়, শিরদাঁড়াও ভেঙে দিয়েছিল। ওই ভাবে জখম অবস্থাতেই তাঁদের জেলে পাঠানো হয়। সমস্ত চিকিৎসকেরা বুদ্ধিমান। সকলেই জয়েন্ট পাশ করেছেন। আমি নিশ্চিত সকলেই আসল সত্য অনুধাবন করতে পারবেন। আমি জানি কিছু বাম সমর্থক আমার সমালোচনা করবেন কিন্তু কাউকে তো আসল সত্যটা বলতে হতই’!
হ্যাঁ, এভাবেই লালবাজার থেকে তিন ভ্যান পুলিশ ন্যাশনালে এসে জুনিয়র ডাক্তারদের পেটাতে শুরু করেছিল। ১৪ জন জুনিয়ার ডাক্তারকে পেটাতে পেটাতে লালবাজার নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। ভারপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেই দিয়েছিলেন, ‘মোকাবিলা হবে বেয়নেট পয়েন্টে’। তাই হয়েছিল। ডাক্তারদের আন্দোলন করার সাধ জন্মের মতো ঘুচিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা সেদিন হয়েছিল।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু সেসব পথে হাঁটেননি। বারবার আলোচনা করেছেন। সিনিয়ার ডাক্তারদের পাশাপাশি জুনিয়ার ডাক্তারদের নবান্নে আসার জন্য বলেছেন। ‘এসমা’ প্রয়োগ করে অমানবিক হননি। ডাক্তারদের পুলিশ দিয়ে পেটাননি। তাঁদের রক্ত বার করেননি, হাড়গোড় ভাঙেননি। বরং আলোচনা করেছেন। একাধিকবার নবান্নে জরুরী বৈঠক করেছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরকে বলেছেন মানবিক ভাবে মোকাবিলা করতে, বেয়নেট দিয়ে নয়। তা এমন মুখ্যমন্ত্রী থাকলে বাম-বিজেপির গাত্রদাহ তো হবেই।