২০০২ সালে ভারতের গুজরাতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। এ ঘটনায় গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্ট।
তাঁর অভিযোগ ছিল, মুসলিমদের ওপর যাবতীয় আক্রোশ যাতে হিন্দুরা মিটিয়ে নিতে পারেন, সে কারণে দাঁড়িয়ে থেকে মোদী নিজে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার তিন দশকের পুরনো একটি মামলায় সেই আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্টকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। এরপরেই প্রশ্ন উঠছে, পুরনো আক্রোশ মেটাতেই কি এতবছর পরে পুরনো মামলা টেনে শাস্তি দেওয়া হল সঞ্জীব ভট্টকে? গুজরাত দাঙ্গায় মোদীর দিকে আঙুল তোলাতেই কি শাস্তি অফিসারকে?
১৯৯০ সালে গুজরাটের জামনগর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন সঞ্জীব ভট্ট। সেই সময় লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং তার সমর্থকদের রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে জামজোধপুর এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধে।
এ ঘটনায় প্রায় ১৫০ জনকে আটক করেন সঞ্জীব ভট্ট। আটকদের মধ্যে প্রভুদাস বৈষ্ণণী নামের এক ব্যক্তিও ছিলেন। ছাড়া পাওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রভুদাস। পরে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়।
হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশি নির্যাতনেই প্রভুদাসের মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার দাবি তোলে। পরবর্তীতে এ নিয়ে থানায় এফআইআরও করেন প্রভুদাসের ভাই। এতে সঞ্জীব ভট্ট-সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন তিনি।
মামলা চলাকালীন ২০১১ সালে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সঞ্জীব ভট্টকে বহিষ্কার করা হয়। ২০১৫ সালের আগস্টে সরকারি গাড়ি অপব্যবহারের অভিযোগে বরখাস্তও করা হয় তাকে।
জামনগর থানায় পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন এক বন্দির মৃত্যুতে সঞ্জীব ভট্টের বিরুদ্ধে খুনের মামলা চলছিল। ওই মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই সঙ্গে আরেক সাবেক আইপিএস অফিসার প্রবীণসিন জালাকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।