আসামের পর এবার কি এনআরসি চালু করা হবে বাংলায়? সপ্তদশ লোকসভার শুরুতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অনুপ্রবেশ জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে বড় বিপদ। অনুপ্রবেশের কারণে এক দিকে দেশের বিভিন্ন অংশে সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই জীবন-জীবিকার উপরেও তারা প্রভাব ফেলেছে। তাই অনুপ্রবেশজনিত সমস্যা থাকা এলাকায় জাতীয় নাগরিক পঞ্জি দ্রুত প্রস্তুত করতে সরকার বদ্ধপরিকর’।
কোবিন্দ কোনও রাজ্যের নাম না-নিলেও, অনেকেরই মতে, তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন আসামের পরে অমিত শাহদের পাখির চোখ বাংলা। বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে অনুপ্রবেশের ফলে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির জনবিন্যাস পাল্টে গিয়েছে। যা সীমান্ত সুরক্ষার প্রশ্নে বড় চ্যালেঞ্জ। উত্তরবঙ্গে লোকসভার প্রচারে গিয়ে এ রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে এনআরসি আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অমিত শাহ। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দ্রুত সেই কাজ শুরু করে দিতে চাইছেন তিনি।
অতীতে যখনই বিজেপি রাজ্যে এনআরসির দাবি তুলেছে, তখনই তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ওই তালিকা তৈরি করে আসলে বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানদের দেশ থেকে তাড়াতে চাইছে সরকার। লোকসভার তৃণমূল দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেন, ‘‘রাজ্যে এনআরসির প্রশ্নই নেই। রাষ্ট্রপতির ভাষণের বিতর্কে সংসদের উভয় কক্ষে দলের আপত্তির কথা জানানো হবে।’’ দল অবশ্য মনে করছে, জুলাই মাসে চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জি প্রকাশের পরে অসমে মানুষের ক্ষোভ এমন পর্যায়ে যাবে যে অন্য রাজ্যে আর ওই তালিকা তৈরির সাহস পাবে না মোদী সরকার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনআরসি নিয়ে বিজেপির অতি সক্রিয়তা তৃণমূলকেই রাজনৈতিক ফায়দা দেবে। কারণ, আসামে খসড়া তালিকায় যেভাবে এক কোটি মানুষের নাম বাদ গিয়েছে তাতে এনআরসি-র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেছে। তাই বাংলায় এনআরসি নিয়ে তাড়াহুড়ো করলে হিতে বিপরীত হতে পারেই বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।