দ্বিতীয় বারের জন্য মোদী সরকার ক্ষমতায় ফিরতেই বেসরকারিকরণের পথে রেল! কৌশলি পদক্ষেপ নিয়ে এবার ঘুরপথেই রেলকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। প্রথমত, বেসরকারিকরণের ইঙ্গিত মিলেছে রেলের জনসংযোগ বিভাগের কাজকর্মে। টিকিট বিক্রির মতো যাত্রী পরিষেবার অন্যান্য দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে ছেড়ে দিতে চাইছে তারা। উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে মোদী সরকার যে পদক্ষেপ করেছেন, তাতে বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট। ১৮ জুন ‘১০০ দিনের টার্গেটে’ যে নির্দেশ রেল বোর্ড ঘোষণা করেছে তাতে দু’টি ট্রেনকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷
জানা গেছে, চালক ও গার্ড ছাড়া ট্রেনের সব দায়িত্ব দেওয়া হবে বেসরকারি সংস্থাকে। সরাসরি বেসরকারি সংস্থাকে এই মুহূর্তে না দিয়ে প্রথমে আইআরসিটিসির মতো সংস্থার হাতে দেওয়া হবে। রেলকে বাৎসরিক লাইসেন্স ফি দিয়ে আইআরসিটিসি ট্রেন দু’টিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে পারবে। ট্রেন দু’টির টিকিট বিক্রি থেকে ক্যাটারিং, পরিচ্ছন্নতা, বেড রোল, এসি, টিকিট পরীক্ষক সবই থাকবে আইআরসিটিসির হাতে। ফলে রেলের নিজস্ব এসি ও টিকিট পরীক্ষকরা থাকবেন না। এই পদ্ধতিতে যে আগামী দিনে চাকরি খোয়াবেন এসি কর্মী থেকে টিকিট পরীক্ষকরা সে বিষয়ে নিশ্চিত রেল আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, ‘লক্ষ্য ১০০ দিন’ প্রকল্পের দু’টি ট্রেনেরই মালিকানা দিয়ে দেওয়া হবে আইআরসিটিসিকে। ট্রেন দু’টি দেওয়া হবে এমন রুটে যেখানে ব্যস্ততা কম। অথচ গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থলে রয়েছে। দেশের ‘স্বর্ণ চতুর্ভুজ’ এবং তার ডায়গোনালের মধ্যেই থাকবে ট্রেনগুলি। অর্থাৎ দেশের বড় শহরগুলি স্পর্শ করবে এমন ট্রেনই দেওয়া হবে বেসরকারি হাতে। বেসরকারি সংস্থাগুলি কোন পথে কীভাবে ট্রেন ভাড়া নিতে আগ্রহী, তা জানতে তাদের কাছে আগ্রহপত্র চাওয়া হবে। সেই নথি খতিয়ে দেখে পাইলট প্রকল্প তৈরি করবে রেল। প্রকল্পে সাড়া পাওয়া গেলে বেসরকারি সংস্থার হাতে টিকিট বিক্রি এবং অন্যান্য পরিষেবার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে।
একশো দিনের মেয়াদ শেষ হলে ফের বিজ্ঞাপন দিয়ে জানতে চাওয়া হবে, কোনও বিশেষ শাখায় ট্রেন কিনতে কোনও বেসরকারি সংস্থা আগ্রহী কিনা। তবে ট্রেন ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়ায় দূর পাল্লার ট্রেনের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে বলে রেলের আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা। বয়স্ক, অশক্ত বা মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঘা পড়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে, পূর্ব রেলের মেনস কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ শর্মা জানিয়েছেন, ‘আমাদের বিষয়টি জানানো মাত্র আন্দোলন শুরু করব।’