তিন নম্বরে ব্যাট করে বিলেতের বিশ্বকাপে পরপর দুটো শতরান! সাকিব আল হাসান বুঝিয়ে দিচ্ছেন তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তে কোথাও ভুল ছিল না। কারণ টিম ম্যানেজমেন্টকে বোঝাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল তাঁর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সতীর্থদের বোঝাতে পেরেছিলেন। বিশ্বকাপে তিনি তিন নম্বরে ব্যাট করতে চান। এটাও জানতেন, যদি একটা ম্যাচে ব্যর্থ হন তাহলে আবার তাঁকে নেমে যেতে হবে পাঁচ নম্বরে। তাই চোয়াল শক্ত করে নিজের বিশ্বাসে অটুট ছিলেন।
অদ্ভুতভাবে বির্তক তাঁকে কখনও পিছু ছাড়ে না। এবারও বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ ফোটো সেশনে তিনি ‘ভুল’ বোঝাবুঝিতে অনুপস্থিত থাকায় কম বির্তক হয়নি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পাপনভাই ক্ষেপে গিয়েছিলেন সাকিবের ওপরে। সাকিব একটা কথাও প্রকাশ্যে বলেননি। জবাব দেবেন এভাবে তা বোধহয় কেউ জানত না। যে ড্রাইভে সাকিব শতরানে পৌঁছলেন তা টনটনের গ্যালারি হাততালির আওয়াজে ফেটে পড়েছিল। ভিভ রিচার্ডসের ডেরা সমারসেটে সাকিবের মাস্তানি মনে থাকবে বহুদিন। যা আবার ভিভের দেশের বিরুদ্ধেই! বাঘের ‘বাচ্চা’ বটে। ৩২১ রান তাড়া করে দেশকে জেতানোর পাশাপাশি সাকিবের আরেকটি বড় প্রাপ্তি কিংবদন্তি জোয়েল গার্নারের হাত থেকে ম্যাচের সেরা উপহার।
লাজুক সাকিবকে শেষ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বেশি ম্যাচ খেলায়নি। বেশিরভাগ সময়ে তাঁকে বসে থাকতে হয়েছে শুধু ডাগআউটেই। একাদশের বাইরে। টনটনের এই ইনিংসটি যে তারও একটা মোক্ষম জবাব। ফ্রাঞ্চাইজি মালিকেরা যখন কলকাতা থেকে সাকিবকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তখন কী ভেবেছিলেন যে বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডারকে বসিয়ে রাখার ‘স্পর্ধার’ জবাব এভাবে পেতে হবে? আবার ফেরা যাক টনটনে। ওসেন টমাসের বলে কভার ড্রাইভটা ক্রিকেট প্রেমীদের মঙে থাকবে বহু দিন। যা সমুদ্র তীরবর্তী যে কোনও মেরিন ড্রাইভের মতোই। সাকিবের সঙ্গে ছিলেন আরেক বাঙালি। লিটন দাস। টনটনের মনে থাকবে লিটনকে। সাকিব ‘ভাই’ লিটনকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে তুললেন ১৮৯ রান। ম্যাচ জেতানোর রসদ তো এই যুগলবন্দিতেই। সাকিবের অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস এবং লিটনের অপরাজিত ৯৪ রানে ইনিংস বিশ্বকাপের ইতিহাসে জ্বলজ্বল করতে বাধ্য। ক্যারিবিয়ান পেস আক্রমণের সামনে বুক চিতিয়ে ব্যাটিং দুই বাঙালির।