বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে এসে ফের জয়ের মুখ দেখলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সৌজন্যে অবশ্যই শাকিব আল হাসান আর লিটন দাস। শাকিব নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডার। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম নক্ষত্রও তিনি। ২০১৯ এবারেই বিশ্বকাপটা তাঁর কাছে যেন স্বপ্নের মতো। এই ম্যাচে নামার আগে একটি সেঞ্চুরি এবং দুটি হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছিলেন শাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে করে ফেললেন কেরিয়ারের নবম এবং এই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শতরান। শাকিবের এই দুর্দান্ত সেঞ্চুরি এবং সেই সঙ্গে লিটন দাসের অপরাজিত অর্ধশতরান, এই দুইয়ের সৌজন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনায়াসে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। এবং সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিল, বাংলার বাঘেদের হালকাভাবে নিলে ভুল করবে তথাকথিত বড় দলগুলি।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই পারফরম্যান্সে নজর কাড়ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কখনও বৃষ্টি আর কখনও অল্পের জন্য হারের জেরে এই ম্যাচটি কার্যত মরণ-বাঁচন ম্যাচে পরিণত হয়েছিল বেঙ্গল টাইগারদের জন্য। সেমিফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে এদিন জিততেই হত। কিন্তু, ম্যাচের শুরুটা ভাল হয়নি বাংলাদেশের। এদিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। মোর্তাজার সেই সিদ্ধান্তকে কার্যত ভুল প্রমাণিত করার পথেই এগিয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। গেইল শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও, লুইস-হোপ এবং হেটমেয়ারের অর্ধশতরানে ভর করে ৩২১ রানের বিশাল স্কোর খাড়া করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোপ করেন ৯৬ রান। লুইস ৭০ এবং হেটমেয়ের ৫০ রানে আউট হন। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন সৈফুদ্দিন এবং মুস্তাফিজুর। ২ টি উইকেট নেন শাকিবও।
৩২২ রানের বিশাল টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে শুরুটা ভালই করে বাংলাদেশ। দলগত ৫২ রানের মাথায় সৌম্য সরকার আউট হলে ক্রিজে আসন শাকিব। এবং তারপর থেকেই শুরু হয় ‘শাকিব শো’। একের পর এক চার-ছক্কায় ক্যারিবিয়ান বোলারদের কার্যত ধূলিস্যাৎ করে দেন বিশ্বের এক নম্বর অল-রাউন্ডার। একইসঙ্গে পূর্ণ করেন নিজের কেরিয়ারের নবম শতরান। এবারের বিশ্বকাপেই যার মধ্যে রয়েছে ২টি। এত বড় রান তাড়া করে ধীরস্থির মস্তিষ্ক আর নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনের পরিচয় দিয়ে শাকিব বাংলাদেশকে জয় এনে দেন। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ৬ হাজার রানের গণ্ডিও পেরিয়ে যান তিনি। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন লিটন দাস। দুজনের অনবদ্য ইনিংসের সুবাদে ৫১ বল বাকি থাকতেই নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এটিই বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান চেজ এবং এই বিশ্বকাপে প্রথমবার কোনও দল আড়াইশোর বেশি রান তাড়া করে জিতল।