মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা কিছুটা সুর নরম করেছিলেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে বলে একপ্রকার দায় স্বীকার করে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, আজ সকালে হঠাতই আন্দোলনকারীরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আজ আলোচনায় বসতে চাইলেও নাকি শর্তই মানা হয়নি তাঁদের! তারপরেই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়, যা এখনও কাটেনি।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাত পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের প্রস্তাব অনুয়ায়ী, নবান্ন সভাগৃহে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের ২৮ জনের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সম্মত হয়েছিল। রবিবার রাতেই নবান্ন থেকে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তার মাধ্যমে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বেলা ৩টের সময় আন্দোলনকারীদের বৈঠকে ডেকেছেন। এতে তাঁরা সম্মতও হয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার সকালে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একটি অংশ দাবি করেন, যতক্ষণ না সরকারি ভাবে চিঠি দিয়ে তাঁদের বৈঠকের স্থান, কার সঙ্গে বৈঠক এবং কখন বৈঠক, এই তিনটি বিষয় স্পষ্ট করা হচ্ছে তত ক্ষণ তাঁরা বৈঠকে অংশ নেবেন না।
প্রথমে অবশ্য মিডিয়ার উপস্থিতির পাশাপাশি বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়েও তাঁদের মধ্যে বৈঠকে যোগদান ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সোমবার সকালেই আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে জানানো হয়, মৌখিক ভাবে বিভিন্ন সূত্র থেকে নবান্নে বৈঠকের কথা জানতে পারলেও সরকারি ভাবে কোনও আমন্ত্রণপত্র তাঁরা হাতে পাননি। সরকারি আমন্ত্রণপত্র ছাড়া তাঁরা কোনও ভাবেই বৈঠকে যোগ দিকে পারবেন না। সাংবাদিকদের এ কথা জানানোর কিছু পরই স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র তাঁদের কাছে পৌঁছয়। যাতে লেখা রয়েছে, প্রতিটা মেডিক্যাল কলেজ থেকে অন্তত ২ জন প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন। বেলা আড়াইটার মধ্যেই পরিচয়পত্র-সহ তাঁদের নবান্নে পৌঁছে যেতে হবে। এবং এ তাতে এ কথাও লেখা রয়েছে যে, পুরো বৈঠকটা রেকর্ড করা হবে।
কিন্তু এরপরেও বেঁকে বসেছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের ওই একই দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক যদি সরাসরি সম্প্রচারিত হতে পারে, তা হলে এই বৈঠকে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি নিয়ে সরকারের আপত্তি কেন? সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতেই বৈঠক হতে হবে। তবে স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, রবিবারই জুনিয়র চিকিৎসকদের স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের জন্য কোনও সংবাদমাধ্যমকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, সেই শর্ত মেনেই বৈঠকে রাজি হয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। এখন তাঁরা যা মানতে অস্বীকার করছেন।