রবিবার ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারত-পাক মহারণ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং টপিকের মধ্যে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন ২০১১-এর এই বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ও বর্তমান সাংসদ গৌতম গম্ভীরও। এদিন তিনি আলোচনার অন্যতম বিষয়ে পরিণত হয়েছেন। সৌজন্যে ভারত-পাক ম্যাচে তাঁর কমেন্ট্রি। উল্লেখ্য, স্টার স্পোর্টসের হয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ধারাভাষ্য করছেন। তাহলে প্রশ্ন, আচমকা এদিন তিনি কেন আলোচনায়। কারণটা হল, এই ভারত-পাক ম্যাচ।
খোলসা করে বলা যাক। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামার ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ৪৯ জন সিআরপিএফ জওয়ান। এই ঘটনার পর ক্ষোভের আগুন জ্বলে গোটা দেশে। সেলেব থেকে ক্রীড়াবিদ কেউই বাদ যাননি, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর বর্বরোচিত হামলার ঘটনার নিন্দায়। তখন বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। শচীন, রাহুল দ্রাবিড়রা বিশ্বকাপে পাক ম্যাচের পক্ষে হলেও অনেকেই এই খেলার বিপক্ষে ছিলেন। পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য বিসিসিআইয়ের এই ম্যাচ বয়কট করার প্রসঙ্গ তোলেন বেশ কয়েকজন প্রাক্তন ক্রিকেটার। “অনেক হয়েছে, আর নয়”, এরূপ মন্তব্য করে বিশ্বকাপে পাক ম্যাচ বয়কটের আহ্বান জানান তাঁরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গৌতম গম্ভীর। গত মার্চ মাসে প্রাক্তন ক্রিকেটার সংবাদমাধ্যমকে জানান, “পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ বয়কট করা উচিত। তাতে ২ পয়েন্ট নষ্ট হলেও কোনও সমস্যা হবে না”।
প্রেক্ষাপট বদলেছে। মাঝে বেশ কয়েকটা মাস কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে বিজেপিতে যোগদান, নির্বাচনী প্রচারে পাকপন্থীদের আক্রমণ, সেনা ইস্যুতে ভোটারদের আবেগ নিয়ে রাজনীতি আর তারপর লোকসভা ভোটে জয়। সব কিছুর পরও তিনি যে আসলে ক্রিকেটের লোক। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মধ্যে তাঁর সমসাময়িক শেহওয়াগ, হরভজন, মহঃ কাইফ, আর পি সিংদের এখন ম্যাচ কমেন্টেটর হিসাবে দেখা যায়। তিনিও ব্যতিক্রম নন এই পেশায়। রবিবার তাঁকেও দেখা যায় ভারত-পাক ম্যাচে ধারভাষ্যকারী হিসাবে। তাহলে কয়েক মাস আগেই তো তিনি এই ম্যাচের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি পাক ম্যাচ বয়কটের স্লোগান তুলেছিলেন।
গৌতম গম্ভীরের এই আচরণ নিয়েই নেটিজেনরা তাঁর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন। তাহলে কি শুধুই রাজনীতিতে আসা এবং বিজেপির রণনীতি অনুযায়ী পাকিস্তান বিরোধিতার জন্য ম্যাচ বয়কটের জন্য সরব হয়েছিলেন গম্ভীর? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তবে কি দেশের আবেগের থেকেও ব্যক্তিগত স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিলেন দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা বর্তমান বিজেপি সাংসদ, এমনটাই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।