জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে পর্যাপ্ত পরিষেবা না পেয়ে সাগরদত্ত হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল তিন দিনের এক শিশুর। একই ঘটনা ঘটেছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেও। এবার ডাক্তারদের কর্মবিরতির মাঝে এক খুদে মুমূর্ষু রোগীর দিকে ফিরেও তাকাল না মালদা মেডিক্যাল কলেজ। ছটফট করতে করতে বাবার কোলেই মৃত্যু হলো তিন বছরের শিশুর।
সন্তানহারা বাবা শিবু ঘোষের হাহাকার, ‘আমার বাচ্চাটাকে দেখল না। কোনও চিকিৎসাই হলো না। মৃতদেহ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হলো।’ তাঁর কথায়, বিষের জ্বালায় ছটফট করছিল ইন্দ্রজিৎ। তাকে কোলে নিয়ে মালদা মেডিক্যালে ছোটেন তিনি। তবে, প্রায় ঘণ্টা তিনেক হাসপাতালের নানা বিভাগে দৌড়োদৌড়ি করেও লাভ হয়নি। কোনও ডাক্তারই শিশুটিকে ভর্তি নিতে রাজি হননি।
জানা গেছে, পুরনো মালদা থানার সারদা কলোনিতে বাড়ি শিবু ঘোষের। জানিয়েছেন, এ দিন সকালে বাড়ির বারান্দায় খেলা করছিল শিশুটি। সেই সময় হাত হাতে ছোবল দেয় একটি বিষধর সাপ। অজ্ঞান হয়ে যায় ইন্দ্রজিৎ। প্রথমে তাকে তড়িঘড়ি মালদা থানার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান শিবু বাবু। সেখান থেকেই তাকে মালদা মেডিকেল কলেজে রেফার করেন চিকিৎসকরা।
শিবু ঘোষের কথায়, ‘সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বাচ্চা কোলে দাঁড়িয়েছিলাম। একজন ডাক্তারও আসেননি। কান্নাকাটি করেও লাভ হয়নি। বেলা ১২টার সময় জরুরি বিভাগের একজন ডাক্তার এসে জানান আমার ছেলে মারা গেছে।’ তাঁর অভিযোগ, শিশু মৃত্যুর খবর চেপে রাখার কথাও নাকি বলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতদেহের কোনও ময়নাতদন্ত হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তাঁরা।
মৃতের পরিবারের দাবি, ‘শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে ডাক্তারদের সমস্যা মেটানো নিয়ে যে বাকবিতণ্ডা চলছে তার বলি হচ্ছে সাধারণ নাগরিক।’
অন্যদিকে, শিশু মৃত্যুর খবর পেয়েই মালদা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে এলাকার বাসিন্দারা। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে মালদা মেডিকেল কলেজে।