আজ জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রা। এদিন আজ সকাল থেকেই শ্রীক্ষেত্র পুরীতে উপচে পড়ছে ভক্তদের ভিড়। স্কন্দপুরাণম্ বলা হয়েছে, পুরীর মন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পরেই প্রথম বার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন। স্নানযাত্রার পূর্বসন্ধ্যায় জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদনমোহনের বিগ্রহ একটি বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বার করে স্নানবেদীতে এনে রাখা হয়। ভক্তেরা এই সময় জগন্নাথকে দর্শন করতে আসেন। স্নানযাত্রার দিন মন্দিরের উত্তর দিকের কূপ থেকে জল এনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে তার শুদ্ধিকরণ করা হয়। তারপর ১০৮টি কলসে সেই জল নিয়ে বিগ্রহগুলিকে স্নান করানো হয়।
সেই দিন সন্ধ্যাবেলা স্নানপর্বের সমাপ্তির পর জগন্নাথ ও বলভদ্রকে গণেশের রূপে সাজানোর জন্য হস্তীমুখ-বিশিষ্ট মস্তকাবরণী পরানো হয়। জগন্নাথের এই রূপটিকে বলা হয় ‘গজবেশ’।
প্রথাগত বিশ্বাস অনুসারে, স্নানযাত্রার পর জগন্নাথ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সময় তাঁকে রাজবৈদ্যের চিকিৎসাধীনে গোপনে একটি সংরক্ষিত কক্ষে রাখা হয়। জগন্নাথের এই অসুস্থতার পর্যায়টি ‘অনসর’ নামে পরিচিত। এই সময় ভক্তেরা দেবতার দর্শন পান না। তাঁদের দর্শনের জন্য বিগ্রহের পরিবর্তে মূল মন্দিরে তিনটি পটচিত্র রাখা হয়। এই সময় ভক্তেরা ব্রহ্মগিরিতে অলরনাথ মন্দিরে যান। তাঁরা বিশ্বাস করেন, অনসর পর্যায়ে জগন্নাথ অলরনাথ রূপে অবস্থান করেন। কথিত আছে, রাজবৈদ্যের আয়ুর্বৈদিক ‘পাঁচন’ খেয়ে এক পক্ষকালের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তারপর ভক্তেরা আবার তাঁকে আবার দর্শন করতে পারেন।
জগন্নাথ দেবের ভক্তদের বিশ্বাস, এই স্নান যাত্রার পূণ্য তিথিতে যদি তাঁরা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে দেবতাকে দর্শন করতে যান, তবে তাঁদের সকল পাপ থেকে মুক্ত হতে পারবেন। এই জন্য অসংখ্য ভক্ত স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীর মন্দির দর্শনে যান। রীতিমতো ভক্তদের ঢল নামে পুরীর রাস্তায় এই স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে।