এ রাজ্যে মেডিক্যাল পঠনপাঠনে আর ‘ডোমিসাইল বি’ কোটা নয়। বাংলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বাংলার পড়ুয়াদের আরও বেশি সুযোগ করে দিতে, সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ওই কোটা সরে গেলে অন্যান্য রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা আর বাংলায় ডাক্তারির আসনে ভাগ বসাতে পারবেন না। বাংলার ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি সংখ্যায় মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ পাবেন।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে বলেন, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এখন ইনটার্ন হিসেবে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠই ভিনরাজ্যের। বাংলা ভাষার সঙ্গে সড়গড় নন। মমতা বলেন, আমাদের মনে হয়েছে, মেডিক্যালে ভর্তির বর্তমান পদ্ধতিতে পরিবর্তন হওয়া উচিত। আগে বাংলার ছেলেমেয়েদের জন্যই বেশি আসন থাকত। বহিরাগতদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু, বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বহির্রাজ্যের ছেলেমেয়েরাই বেশি। ফলে, সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে রাজ্যের পড়ুয়াদের আসন ফের বাড়ানো হবে।
আইন সংশোধিত হলে, রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য অন্তত ২০ শতাংশ বেশি আসনে ভর্তির সুযোগ মিলবে বলে জানা গেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে। গতকাল এসএসকেএমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একজন ডাক্তার তৈরি করতে সরকারের ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়। ডাক্তার হওয়ার পর দুই বা তিন বছরের বন্ডে সই করে, তা পূরণ হলেই অন্য রাজ্যে চলে যায়। মেডিক্যাল পড়ুয়ারা ভিন রাজ্যের বেশি হওয়ায় এই প্রবণতা বেশি।
তাছাড়া, অন্যান্য রাজ্যের ছেলেমেয়েরা ‘ডোমিসাইল বি সার্টিফিকেট’ দেখিয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পান। কিন্তু তাঁদের অনেকেই ঠিকঠাক বাংলা বলতে পারেন না। সর্বোপরি বাংলার অনেক ছাত্রছাত্রী মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। সেই জন্যই ওই কোটা তুলে দেওয়া দরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আগে রাজ্যের ছেলেমেয়েরাই সব সুযোগ পেত। এখন তা হয় না। সিস্টেমটা একটু পাল্টানো দরকার। যদি ‘ডোমিসাইল এ’ চালু করি এবং ‘ডোমিসাইল বি’ যদি না-থাকে, তা হলে আমাদের ছেলেরা আরও ২০ শতাংশ বেশি সুযোগ পাবে। তাই আমি সে-দিকেই যাব। তার জন্য আইন করব। আমি ইতিমধ্যে সেটা বলেও দিয়েছি।”