ছোট কারও মৃত্যু হলে বুকের ভেতরে পাথর ভারি হতে থাকে। চোখের জল বাঁধ মানে না। কিন্তু এরা তো মানুষ নয়, মানুষের মতো মন নেই। কিন্তু তা সত্বেও ওরা খবরের শিরোনামে। হাতির বাচ্চার মৃতদেহ নিয়ে শেষযাত্রায় সামিল হল হাতির পাল! হাতির শ্রাদ্ধ নিয়ে এ বছরের গোড়াতেই খবর হয়েছিল জানুয়ারি মাসে। দুর্ঘটনায় মৃত ২ হাতির জন্য নিয়ম মেনে ১১ দিনের মাথায় সেই শ্রাদ্ধ করেছিলেন মেদিনীপুরের মানুষজন। তবে এবার এই শেষকৃত্যের সমস্ত ব্যবস্থাই করল তারা নিজেরাই।
ফরেস্ট অফিসার প্রবীণ কাশওয়ান পুরো ঘটনাটা ভিডিয়ো করেছেন, তা শেষ তিন দিনে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা সোশ্যাল মিডিয়াতে। ভারতেরই একটি জঙ্গল লাগোয়া রাস্তায় এই ঘটনা দেখে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছেন সকলেই। যদিও ঘটনাস্থলের কথা নির্দিষ্ট করে কোথাও বলেননি প্রবীণ। ভিডিয়োটি ১৪০০০ লাইক এবং ৬৭০০ কমেন্টে ভরে গেছে।
একটি হাতি মৃত ছোট্ট হাতির দেহ শুঁড়ে করে জঙ্গলের বাইরে এনে প্রথমে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। দেহটি রাখে সেখানে। তারপরই দেখা যায়, দলের সাতটি হাতিই একে একে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসছে। তাদের কারও কারও আবার শুঁড়ে রয়েছে গাছের ডালপালা। সেগুলো জড়ো করে তারা। প্রবীণ তাঁর ট্যুইটে লিখেছেন, হাতিরা কোনও মতেই ছোট্ট মৃত হাতির দেহটা ছাড়তে চাইছিল না। তারা বারবার দেহটা শুঁকে দেখছিল, শুঁড় বারবার করে তার গায়ে বোলাচ্ছিল।
হাতিরা এমনিতেই নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক পারিবারিক বন্ধনে আটকে থাকে। অনেক সময়েই দেখা যায়, একটি দল আরেকটি দলের সাথে জঙ্গলের রাস্তায় দেখা হলে নিজেদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। তাদের মধ্যে জিঘাংসার নামমাত্র দেখা যায় না। এমনকি, কোনও ছোট্ট বাচ্চা সমস্যায় পড়লে, তার মা তাকে পুরোটা সামলাতে না পারলে, আশপাশের মাসি-পিসিরাও চলে আসে তাকে সাহায্য করতে। আর এ তো মৃত্যুর মতো একটা ঘটনা। এরকম হাতিদের প্রাযশই দেখা যায় আফ্রিকা এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গায়।