দেশের প্রধানমন্ত্রীর মতিভ্রম হয়েছে, তাই গরুর পিছনে খরচা করছে কোটি কোটি টাকা। আজ বাঁকুড়ার সভার শুরু থেকেই তিনি ছিলেন আক্রমণাত্ত্বক ছিলেন। তিন চারদিনের নোটিশে বাঁকুড়ায় তৃণমূলের জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল, কথা ছিল সেখানে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা অনুযায়ী আজ বাঁকুড়ায় জনসভা করলেন তিনি। যুবনেতা জানিয়েছিলেন, বাইরে থেকে লোক আসবে না। শুধু রঘুনাথপুরের মানুষজন আসবেন, তাতে যদি ১০ জন হয় তালেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভায় আসবেন।
তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে রঘুনাথপুরের আড়রার ব্যাঙপাহাড় মাঠে জনসভা করেন। এই সভায় উপস্থিত ছিল অগুণতি মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে গোটা বাংলা, তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাতে, মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থাকতে এদিন এতো মানুষের সমাগম হয়।
আগামী ১২ মে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ। তাই হাতে খুব একটা বেশি সময় নেই। তাই জোরকদমে চলছে প্রচার আর জনসভা। বক্তৃতার প্রথমেই মঞ্চে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অভিষেক। আর বাঁকুড়ার এই সভায় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা সোহম। তাঁকেও ধন্যবাদ জানান যুবনেতা অভিষেক। প্রতিদিনের মতোই আজও সভায় উপস্থিত সকল মানুষ যে তীব্র গরম উপেক্ষা করে যে এসেছেন, তাঁর জন্য অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, এই গরমে কেউ রাজনৈতিক বক্তৃতা শুনতে আসেননা। তাই যারাই এসেছেন মা-মাটি-মানুষকে ভালোবেসে এসেছেন। দলের উপর অগাধ ভরসা থেকে এসেছেন। এই প্রচারে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, পূর্ব থেকে পশ্চিম, পাড়ার চায়ের দোকান থেকে কলেজ ক্যাম্পাস, পাড়ার মোড় থেকে অফিস পাড়া, কিংবা মায়েদের রান্নাঘর সর্বত্রই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়জয়কার। সকলেই চান মমতা দেশনেত্রী হোন, প্রধান মন্ত্রী হোন।
অভিষেক বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘গলায় গামছা, মুখে রাম, দিনে তেরঙ্গা, রাতে দাঙ্গা’। এনারা মানুষের কোনও উন্নতি করতে পারেনা। দিনরাত জয় শ্রী রাম করেন কিন্তু পনেরো লক্ষ টাকা দেন নি। দু,কোটি বেকারকে বছরে চাকরি দেবেন বলেছিলেন মোদী, তাও দেননি। বরং বেড়েছে বেকারত্ব। মানুষের মুখে ভাত জুটছে না, এদিকে দেশের মানুষের টাকা নিয়ে নীরব মোদী পালালেন, খোঁজ নিলেন না মোদী। মুখে শান্তির কথা বললেও দাঙ্গায় বিশ্বাসী, মানুষের সঙ্গে মানুষের দাঙ্গায় বিশ্বাসী। জাত ধর্ম নিয়ে মানুষের বিভেদ করে ভোট আদায়ের জন্য। ভারতের মত ধর্ম নিরপেক্ষ গণতন্ত্র দেশে এবিষয় লজ্জাজনক।
দেশের প্রধানমন্ত্রীর মতিভ্রম হওয়াকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন অভিষেক এই সভা থেকে। তিনি জানান, দেশের প্রধানমন্ত্রী গরুকে নিয়ে প্রকল্পে খরচা করছেন সাড়ে সাতশো কোটি। এদিকে দেশের মানুষের উন্নয়নে অর্থাৎ দেশের মা বোনেদের জন্য খরচা করেছেন ১০০ কোটি। এবার আপনারা ভাবুন কাকে ভোট দেবেন। রাম মন্দির গড়বেন, হিন্দুদের সুযোগ বেশি দেবেন। মুসলিম হলে দেশ থেকে তাড়াবেন, এটা কোন নীতি? আরএসএস বাংলায় এলে বাঙালিদের সমস্যার কথাও জানান অভিষেক। তিনি বারবার সাধারণ মানুষদের জানান, ভেবে ভোট দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে ভোট দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী বাংলার সাধারণ গরীব মানুষের জন্য নানা প্রকল্প নিয়েছেন। কন্যাশ্রী থেকে সবুথসাথী, যুবশ্রী থেকে সমব্যথী, রূপশ্রী প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী যে উন্নয়ন করেছেন কেউ কোথাও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এত কিছু করেন না বলে জানান অভিষেক। এমনকি কন্যাশ্রী প্রকল্প যে বিশ্ব দরবারে সমাদৃত হয়েছে সে কথাও জানান।
সভার শেষে তিনি বলেন, বিজেপিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতেই হবে। নইলে দেশের সর্বনাশ হবে। এই বিভেদ নিয়ে রাজনীতি, উগ্র জাতীয়তাবাদ নিয়ে রাজনীতি মানুষ সহ্য করেনি, করবে না। তাই সকলে মানুষের স্বার্থে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করে ধরুন। জোড়া ফুলে ভোট দিয়ে মমতাকে জয়ী করুন, এই আহ্বান দেন।