‘দাঁড়ান দাঁড়ান আঙুলটা দেখি, দেখি গন্ধ আছে কিনা, আচ্ছা ভোটের পর দেখে নিচ্ছি…’
গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে আঙুল উঁচিয়ে কালির দাগ দেখাচ্ছেন সেলেব্রিটি, হেভিওয়েটরা। কিন্তু এবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে কিন্তু ভোটারদের আঙুলে কালির ছাপ দেখতে আগ্রহী ছিলেন না কেউ। বরং আঙুলের গন্ধ শুঁকলেন বিজেপির কর্মীরা।
দেশজুড়ে প্রবল ভাবে বইছে মোদী বিরোধী হাওয়া। মানুষও ভীষণ রকম অসন্তুষ্ট মোদীর কারজ কলাপে। হাবেভাব সকলেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রের ক্ষমতায় আর গেরুয়া শিবিরকে আর চান না কেউই। তাই হাওয়া বেগতিক বুঝে ভোটবাক্সের হাল বুঝতে বিজেপির কর্মীরা ফের অন্যায়ের পথ নিলেন। ইভিএমে বিজেপির বোতামে তাঁরা লাগিয়ে রাখলেন আতর আর ভোটাররা ভোট দিয়ে বেরোলেই তাঁদের হাত শুঁকলেন কর্মীরা। আর আঙুলে গন্ধ না থাকলেই চলল হুমকি।
বীরভূম কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ভোটের আগে থেকেই হুমকি, শাসানি, মারধরের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। হাওয়া তো বেগতিক তাই ভোট কি পড়ছে আদৌ? সেটা যাচাই করতে অভিনব কৌশল প্রয়োগের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম অঞ্চলের বকুলিয়ার ১৩২ নম্বর বুথে তাই চলল আতরের পরীক্ষা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিজেপির কর্মীরা ইভিএমে দলের প্রতীকের পাশের বোতামে (যেখানে টিপে ভোট দেওয়া হয়) আতর লাগিয়ে রাখা হয়। বিজেপিকে ভোট দিলেই সেই আতরের গন্ধ লেগে যাচ্ছে আঙুলে। এর পর কেউ ভোট দিয়ে বেরোলেই তাঁর আঙুল শুঁকে পরীক্ষা করেন গেরুয়া কর্মীরা। কারও আঙুলে গন্ধ না থাকলেই তাঁকে চিহ্নিত করে রাখা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ।
ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। শেষপর্যন্ত দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ আউশগ্রামে ভোতাগ্রামে গিয়ে চারটের বুথের ইভিএম থেকে আতর মুছে ফেলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা।
হাওয়া যে বড্ড বেগতিক তা তো স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল কিন্তু গেরুয়া শিবিরের মনে যে এত ভয় ঢুকে আছে তা কে জানত? বিজেপি অসৎ পথের পথিক তা জানতে আর কারোর বাকি নেই, তাই বলে এভাবে ভোট গোনা যে বিজেপির ভয়কে একেবারে সামনে এনে দিল তা বলাই বাহুল্য।