গান মানুষের সবসময়ের সঙ্গী। এ এক এমন জিনিস যা মন খারাপ থেকে মন ভালো সবকিছুর আশ্রয় হয়ে দাঁড়ায়। কিছু গান গাওয়াই হয় এমন ভাবে যা মনের মণিকোঠায় থেকে যায় বহুদিন।একজন সঙ্গীত শিল্পীই পারেন তাঁর গায়কীর মাধ্যমে কোনও গানকে অমর করে রাখতে। আজ এমনই এক গায়কের জন্মদিন যিনি গানের মধ্যে থাকা বিরহ, প্রেম কিংবা আনন্দের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ফেলেন শ্রোতাকে। আজ অরিজিৎ সিং-এর জন্মদিন।
১৯৮৭ সালের ২৫ এপ্রিল মুর্শিদাবাদে তাঁর জন্ম। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন তিনি। তিনি যে পরবর্তীর এক অসাধারণ গায়ক তা তখন থেকেই বোঝা যেত। তিনি ২০০৫ সালে ভারতীয় জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশনের প্রতিভা খোঁজার অনুষ্ঠান ফেম গুরুকুল-এর প্রতিযোগী ছিলেন। সেখান থেকেই নজর কাড়েন তিনি। তখন থেকেই তিনি কাজ করতে শুরু করেন সিনেমার গানে। তিনি হিন্দির পাশাপাশি বাংলা গানেও সমান জনপ্রিয়। কলকাতার ছবিতে তার বেশকিছু হিট গান রয়েছে।তিনি সংগীত প্রোগ্রামার হিসেবে সংগীতের জগতে তার যাত্রা শুরু করেন। এরপর তিনি বেশকিছু সংগীত পরিচালক যেমন মিথুন শর্মা,বিশাল-শেখর এবং প্রীতমের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। কাজ করেছেন শঙ্কর মহাদেবনের কিছু বিজ্ঞাপনী জিঙ্গলসেও।
‘আশিকি ২’ ছবিতে তাঁর গাওয়া ‘তুম হি হো’ দিয়ে সকলের হৃদয় জয় করে নেন তিনি। সকলের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে সেই গান। শুধু এই গানটি নয়, সিনেমার বাদবাকি গানগুলিও খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। ব্যস আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। তারপর একে একে কভি জো বাদল বরসে, ফির লে আয়া দিল, লাল ইশক, শুনো না সঙ্গ মরমর, খামোশিয়া, তেরি মেরি কাহানি, ফির ভি তুমকো চাহুঙ্গা, রবতা, হামদর্দ, সোচ না সাকে, আগর তুম সাথ হো ইত্যাদির মত জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। সবকটি গানের সঙ্গেই নিজেদের মেলাতে পেরেছেন শ্রোতারা।
শুধু হিন্দী নয় বাংলাতেও সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। প্রায় ৬ বছর আগের গান বোঝে না সে বোঝে না আজও ভোলেনি কেউ। মন আমার তোর কিনারে, দেখো আলোয় আলো আকাশ, মন মাঝি রে, দিন ক্ষণ মাপা আছে, রাতেরই শেষে, খেলা শেষ, তোমাকে চাই, তুই ছুঁলি যখন, কিছু কিছু কথা এরকম একের পর এক মন কেড়ে নেওয়া গান উপহার দিয়েছেন তিনি।
তবে সাফল্যের শীর্ষে উঠে আজও তাঁর পা আছে মাটিতেই। আজও নিজের মধ্যে মুর্শিদাবাদের সেই ছেলেটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি। তাই তিনি অকপটে বলতে পারেন, “আমার গুণ তেমন নেই তবে দোষ বলতে পারব। যেমন আমি ঘুমিয়ে গেলে আমাকে আর কেউ উঠাতে পারে না, সময় মত কোথাও পৌছাতে পারি না। এটা মনে হয় আজ আমার সাথে দেখা করতে এসেই বুঝেছেন। আর আমার সব থেকে বড় দোষ হলো আমি কথা দিয়ে কথা রাখতে পারি না। আর এত দোষের মধ্যে একটি গুনই আছে আমার । আমি যা করি ভেতর থেকে করি। কোন কাজ হাতে নিলে চেষ্টা করি ভালোভাবে সেটা শেষ করার”।
২০১৪ সালে দীর্ঘদিনের প্রেমিকা কোয়েলকে বিয়ে করেন তিনি। এখন শুধু স্বামী নয়। বাবার দায়িত্বও পালন করেন তিনি। তবে বাবা হয়ে গেলেও মেয়েদের মনে এখনও দাপটে রাজত্ব করেন তিনি। এভাবেই রাজার মত বাঁচুন অরিজিৎ। আরও দারুণ দারুণ গান উপহার দিন সঙ্গীতজগতকে। ‘এখন খবর’-এর পক্ষ থেকে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।