গতকাল, রবিবারই আসন্ন লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ গতকালই আনুষ্ঠানিক ভাবে কাঠি পড়ে গেল ভোটের ঢাকে। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ও আরও একাধিক নিয়ে লোকসভা ভোটের আগে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতেই বেসামাল বিজেপি। শরিকি কাজিয়া তো ছিলই, পাশাপাশি দলের অন্দরেও শুরু হয়েছে গোলমাল। অন্যদিকে কংগ্রেস শিবির যথেষ্টই চাঙ্গা। ইতিমধ্যেই দলছুটদের অনেককেই ফিরিয়ে এনে গেরুয়া শিবিরের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যে লোকসভার আসন ২৫টি। সব ক’টি রাজ্যেই এখন বিজেপি বা তাঁদের শরিক দলের সরকার। কিন্তু তার পরেও সেখানে মোটেই স্বস্তিতে নেই বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের মতোই তারাও ৮টি আসন পায়। আবার মোট ২৫টি আসনের মধ্যে ১৪টিই আসামে। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৩টি আসন। বিজেপি পায় ৭টি। তবে এবার এনআরসি-র কারণে বাঙালিরা ক্ষিপ্ত বিজেপি সরকারের ওপর। আর অসমিয়ারা ক্ষিপ্ত নাগরিকত্ব সংশোধনীর কারণে। ইতিমধ্যেই অগপ সরকার ছেড়ে বেরিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, অরুণাচল প্রদেশে স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট (পিআরসি) নিয়ে বেকায়দায় বিজেপি। কংগ্রেসছুটদের নিয়ে গড়া বিজেপি সরকারকে বিধানসভা ভোটেও লড়তে হবে। পিআরসি–আন্দোলনে পুলিশের গুলিচালনার ক্ষত এখনও মেলায়নি। নাগাল্যান্ডে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির শীর্ষ নেতা কেএন চিসি দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি দলের প্রথম সারির এক ঝাঁক নেতাও সদলবলে কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন।
আবার, মেঘালয়ে এনপিপি সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জানিয়েছেন, রাজ্যের ২টি আসনে নিজেরাই প্রার্থী দেবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, আসাম-সহ অন্যান্য রাজ্যেও প্রার্থী দিচ্ছে এনপিপি। পাশাপাশি, সিকিমে পবন চামলিঙের সঙ্গে সমঝোতা হচ্ছে না বিজেপির। মণিপুরে দলের অন্দরে চলছে ঘোরতর গোলমাল। মিজোরামে ক্ষমতাসীন এমএনএফ-ও জানিয়ে দিয়েছে নিজেদের শক্তিতেই ভোটে লড়বেন তারা। বাকি রইল শুধু ত্রিপুরা। সেখানের রাজ পরিবারের উত্তরসূরি প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মনকে প্রদেশ সভাপতি করে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। সেইসঙ্গে দলে ফিরিয়ে এনেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মনের বাবা সমীররঞ্জন বর্মনকে। ফলে, উত্তর-পুবের ২৫টি আসনের মধ্যে বিজেপির ২৩টি পাওয়ার স্বপ্ন এখন দিবাস্বপ্নে পরিণত হয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।