ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়েই পড়ল। এমন ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’ হাবভাব যে আসন্ন লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সেটাই এবার মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল বিজেপি নেতা তথা কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার। পাকিস্তানে আটক ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দনের জন্য গোটা দেশ যখন উৎকন্ঠায় তখন ভোটের অঙ্ক কষে ইয়েদুরাপ্পা বলে দিলেন, ‘পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় বায়ুসেনা যে স্ট্রাইক করেছে, তাতে ২২টি লোকসভা আসন বিজেপি-র জন্য নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে’।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে সম্প্রতি প্রচারে বেরিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ইয়েদুরাপ্পা। চিত্রদূর্গে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘গত চল্লিশ বছরে এই প্রথমবার পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়া গেল। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাহসিকতার জন্যই তা সম্ভব হয়েছে। পুলওয়ামার বদলা নিয়ে ছাড়বেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যাঘাত করে তা পূরণ করেছেন তিনি।এই স্ট্রাইক যুব সমাজকে অক্সিজেন দিয়েছে। আমরা ২২টি আসন জিতব।’
ইয়েদুরাপ্পার এমন মন্তব্যের পরেই নিন্দার ঝড় উঠেছে সারা দেশে। ভারত-পাকিস্তানের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যখন ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই আশু কর্তব্য ছিল, তখন উল্টোপথে হাঁটতে শুরু করলেন ইয়েদুরিয়াপ্পা। পুলওয়ামার ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘রাজনীতি করার জন্য কি জওয়ানদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হলো?’ মমতার তোলা সেই প্রশ্নকেই আরও উসকে দিলেন ইয়েদুরিয়াপ্পা। বিজেপি নেতার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে একটি টুইট করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ও সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি লেখেন, ‘গতকাল বিরোধীদের জয়েন্ট স্টেটমেণ্টের দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফেই এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে’।
বিজেপি নেতার এমন মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়াতেও উঠেছে নিন্দার ঝড়। অনেকের প্রশ্ন, নির্বাচনী জয়ই কি বিজেপির কাছে সবকিছু? দেশের নিরাপত্তার কোনও গুরুত্ব নেই? দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করাই কি বিজেপির নির্বাচনী রণকৌশল?