‘পাবলিক প্লেসে নয়, টয়লেটে গিয়েই সন্তানকে স্তন্যপান করাতে হবে।’ শপিং মলে কোলের শিশুকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে এরকমই নিদান শুনতে হয়েছিল এক মহিলাকে৷ ওইদিন হেনস্থার শিকার হওয়ার পর থেকেই বাইরে সন্তানকে স্তন্যপান করানোর দাবি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। পাশে দাঁড়িয়েছিল গোটা শহর। এবার তাঁর পাশে দাঁড়াল প্রশাসন। এবং অবশেষে মিলল সরকারি স্বীকৃতি। শহরের সবকটি মলে ‘মাদার কেয়ার রুম’ তৈরির নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে দক্ষিণ কলকাতার এক শপিং মলে সন্তানকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন ওই মহিলা। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, শপিং মলের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে বলেন, শৌচালয়ে গিয়ে স্তন্যপান করাতে। শপিং মলে শিশুদের স্তন্যপান করানোর কোনও জায়গা নেই দেখে অবাক হয়েছিলেন তিনি। তখনই ঠিক করেন, এর প্রতিবাদ করতে হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরো ঘটনাটি লিখে প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। বাড়ির বাইরে সন্তানকে স্তন্যপান করানোর অধিকার চেয়ে সরব হয়েছিলেন। এরপরই টনক নড়েছিল নেটিজেনদের। ওই মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সবাই। সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রতিবাদ। অবশেষে সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিল কলকাতা পুরসভা।
গতকাল, বুধবার ছিল পুরসভার মেয়র পারিষদের বৈঠক। সেখানেই ঠিক হয়, শহরের প্রতিটি শপিং মলে ‘মাদার কেয়ার রুম’ তৈরি করতে হবে। বৈঠক শেষে বেরিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, শহরের প্রতিটি শপিং মলে অবিলম্বে এই মাদার কেয়ার রুম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেখানে মায়েরা স্তন্যপান করাতে পারবেন তাঁদের শিশুদের।
মেয়র জানান, যদি কোনও বেসরকারি সংস্থা নতুন শপিং মল বা বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সেই প্ল্যান কলকাতা পুরসভাকে জমা দেওয়ার সময় সেই প্ল্যানে থাকতে হবে এই মাদার কেয়ার রুম। এই মাদার কেয়ার রুম এখন থেকে বস্তুত বাধ্যতামূলক করা হবে কলকাতার প্রত্যেক বাজার ও শপিং মলগুলিতে। পুরনো যে বাজার বা শপিংমলগুলি রয়েছে, সেখানেও নতুন করে তৈরি করতে হবে মায়েদের জন্য এই বিশেষ মাদার কেয়ার রুম।
কলকাতা পুরসভার এই অভিনব পদক্ষেপ যে প্রশংসনীয় তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে, জানা গেছে, কলকাতা পুরসভার এই ঘোষণায় খুশি সেই মহিলাও।