একে ভালোবাসার দিন তা আবার গোলাপহীন, এমনটা হয় নাকি! প্রেমদিবসে গোলাপের কদর সবসময়েই থাকে আর তাই এইদিনে গোলাপের দাম হয় অনিয়ন্ত্রিত। আগের বারের তুলনায় এবার অবশ্য সেই অতি দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করছেন ফুলচাষি, ব্যবসায়ীরা। কারণ, এবার গোলাপ ফুলের চাহিদার মতো উৎপাদনটাও সর্বাধিক।
কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া ব্লকের খন্নাডিহি, পাঁশকুড়া ১ অঞ্চল, কেশাপট ও মাইসরা এলাকায় চাষ হয় গোলাপের। এই দুই এলাকার ২৫ হাজার ফুল চাষির প্রায় সিংহভাগই জড়িত গোলাপ ফুল চাষের সঙ্গে। কাঁসাই নদীর পাড় বরাবর বিস্তীর্ণ নদীপাড়ে চাষ হয় গোলাপের। গোটা এলাকা যেন গোলাপের রাজ্যত্ব।
সারা বাংলা ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘উপযোগী আবহাওয়ার জন্য এবার গোলাপ উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় বেশি। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিনের হিমঘর সমস্যাটাও এবার মিটেছে। তাই গোলাপের চাষ ও ব্যবসায় যুক্ত মানুষ এবার খুশি। উৎপাদন বাড়ায় চাষিরা যেমন লাভ পাবেন, বাজারে ফাটকাবাজিও কমবে।’
পাঁশকুড়া ফুলবাজার ব্যবসায়ী কমিটির উদ্যোগে সম্প্রতি চালু হয়েছে একটি সরকারি হিমঘর। সরকারি হিমঘরটি শুধুমাত্র ফুল সঞ্চয়ের জন্য। আর ফুল সঞ্চয়ে খরচও খুব কম এখানে। ১০০০ গোলাপের একটি প্যাকেট সরকারি হিমঘরে রাখতে খরচ লাগে ১০০ টাকা। স্বাভাবিকভাবে ভাল উৎপাদন ছাড়াও হিমঘর সমস্যা দূর হওয়ায় এবার লাভ নিয়ে আর কোনও সংশয় যে থাকছে না, তা স্পষ্ট গোলাপ চাষি–বিক্রেতাদের শরীরের ভাষায়। আগে বেসরকারি বহুমুখী হিমঘরে গোলাপ সঞ্চয় করতে হত। এতে ফুলের মান নষ্ট হতো এবং অধিক টাকাও খরচ হত।
মঙ্গলবার পাইকারি ফুলের বাজারে যথাক্রমে ১০০ লাল, সাদা এবং গোলাপি গোলাপের দাম ছিল যথাক্রমে ৫০০, ৮০০ ও ৮০০ টাকা। ১৪ ফেব্রুয়ারি খুব বেশি হলে পাইকারি দরে আরও ১০০ টাকা বাড়তে পারে। যা খুচরো বিক্রেতারা ১৫–২০ টাকার মধ্যেই বিক্রি করতে পারবেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া এবং কোলাঘাট ব্লকেই রাজ্যের সর্বাধিক গোলাপ উৎপাদন হয়। লাল, সাদা আর গোলাপি গোলাপের চাষ হয়। যা চাষি, পাইকারি ব্যবসায়ী হয়ে খুচরো ব্যবসায়ীর হাত ধরে পৌঁছে যায় রাজ্য এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।