সোমবার শেষ হল ২৩তম যাত্রা উৎসব। উৎসবের শেষ দিনে বাগবাজার ফণিভূষন বিদ্যাবিনোদ মঞ্চে যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস যাত্রা শিল্পের প্রচার ও প্রসারের জন্য সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন। তিনি বলেছেন, “২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর যাত্রা শিল্পে ‘আমরা-ওরা’ বিভেদ দূর হয়েছে। আমরা চাই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকল মানুষ যেন একটা পরিবারের মতো একত্রে থাকেন। তাহলে পাঁচশো বছরের বেশি প্রাচীন এই শিল্পে একদিন প্লাবন সৃষ্টি হবেই হবে”।
বাম সরকারের আমলে যাত্রা শিল্পীরা গ্রাম বাংলায় গেলে তাঁদেরকে নানা সময় সমস্যায় পড়তে হতো। নানারকম পুলিশি জুলুমও চলতো। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা নেই। হয়রানি রুখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি যাত্রা দলের বাসে যেন যাত্রা অ্যাকাডেমির স্টিকার লাগানো থাকে। বর্তমান সরকার চায়, নানা কলাকুশলী এবং যাত্রা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের সামগ্রিক উন্নয়ন। তাহলে এই শিল্প আরও এগিয়ে যাবে।
যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি বলেন, “যাত্রা জগতের দুঃস্থ শিল্পীদের সাহায্যকারীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে যাত্রা শিল্পীদের জন্য নানা সম্মান পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। যেটা আগের সরকারের আমলে ভাবাই যেত না”।
অনুষ্ঠানের শেষ দিনে বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে মন্ত্রী ৩২টি যাত্রা দলের প্রযোজকদের হাতে সম্মান স্মারক তুলে দেন। পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা সম্মেলনের সভাপতি সমীর সেন, যুগ্ম সম্পাদক তাপস দাস বলেন, যাত্রা উপলক্ষে যাত্রা প্রাঙ্গণে যে প্রদর্শনী এবং আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে এবার বেশ সাড়া মিলেছিল। রাজ্য যাত্রা প্রহরীর সম্পাদিকা মিতালি চক্রবর্তী বলেন, এই শিল্পে নতুন প্রতিভার সন্ধানে রাজ্য সরকারের তরফে ফি বছর যুবক যুবতীদের নিয়ে যাত্রার উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখান থেকে উত্তীর্ণ ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন যাত্রা অপেরাতে সরাসরি সুযোগও পাচ্ছেন। যেটা এক কথায় প্রশংসাযোগ্য। বাংলায় ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে যাওয়া এই শিল্প ফের প্রাণ ফিরে পাওয়ায় সকলেই খুশি। এখন সকলের প্রত্যাশা, গ্রামগঞ্জের মতো শহরের বুকেও যেন যাত্রা শিল্পকে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।