এবার বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়ে দিলেন, আগামী লোকসভা ভোটের পর প্রধানমন্ত্রী হিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। বুধবার দুর্গাপুরের বি–জোন তিলক রোড ময়দানের বিশাল জনসভায় মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘চাইছে ভারতের জনতা, প্রধানমন্ত্রী মমতা।’
গতকালের জনসভায় অরূপ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আরও দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও স্বপন দেবনাথ। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে অরূপ বলেন, মোদী সরকার সিবিআই, ইডি আর ইনকাম ট্যাক্সকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বাংলায় উন্নয়নের সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। বিজেপি বাংলার মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে সেই উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর আপনার এত রাগ কেন? আপনি তো এত বড় নেতা! ৫৬ ইঞ্চি নাকি বুক! এই বুকে একটা কুঁড়ে ঘরের মেয়ের জন্য এইটুকু জায়গা নেই? তাতে এত ভয়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিগেডে সমাবেশ করেছেন বলে সিবিআই ও ইডিকে লেলিয়ে দিচ্ছেন!’
মমতার সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মমতাই ৩৪ বছর লড়াই করেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। হাজরা মোড়ে সিপিএম তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। তবুও তিনি সিপিএম নামের জগদ্দল পাথরটাকে সরাতে পেরেছেন। তিনি যে–সে নেত্রী নন! অন্য কাউকে ভয় দেখাতে পারেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছোঁয়া যায় না। ভারতবর্ষে সততার প্রতীক যদি কেউ থাকেন, তবে তিনি হলেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন যে, ‘নরেন্দ্র মোদী, আপনি ভাল কথা বলতে পারেন। ভাল করে মিথ্যা বলতে পারেন। মন কি বাত বলতে পারেন। কিন্তু মানুষের মন জয় করতে পারেন না। মানুষের মন আর হৃদয় যদি কেউ বোঝেন, তবে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছাত্র, যুব, মহিলাদের কথা ভাবেন। মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গত ৭ বছরে বাংলাকে ভারতের এক নম্বর জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছেন। তাই আমরা চাই তিনি ভারতের নেতৃত্ব দিন।’
মন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, ‘চাইছে ভারতের জনতা, প্রধানমন্ত্রী মমতা। এই স্লোগান নিয়েই আগামীতে শুরু হবে আমাদের পথ চলা। আমরা দেখতে চাই, মানুষ বড়, না এজেন্সি বড়। এজেন্সির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। আর উন্নয়নও চলবে।’
অন্যদিকে, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘এখানকার কেন্দ্রীয় সরকারের কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সেগুলো খোলেনি। গত ৬ মাস, এক বছর আগেই হিন্দুস্থান কেবলস আর বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বন্ধ হয়ে গেছে। ১০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে গেছেন। ইতিমধ্যে ২০টি কয়লা খাদান বন্ধ হয়ে রয়েছে। সাড়ে চার বছরেই বিজেপির মুখোশ খুলে গেছে।’
একই সুর রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্পমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের গলায়ও। তিনি বলেন, ‘গরিব শ্রমিকদের কথা কি মোদী ভাবেন? যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ওপর যখন আঘাত আসে, তখন তার প্রতিবাদ করেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।’