হিন্দুত্ববাদকে হাতিয়ার করেই রাজনীতির ময়দানে নেমেছিল যোগী সরকার। হিন্দুত্ববাদের দোহাই দিয়ে নানারকম হিংসাত্মক কার্যকলাপের সংখ্যাও এই সরকারের নেহাতই কম নয়। কিন্তু এবার মাত্রা ছাড়ালো পূর্বের সব কিছুর। শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণে ২০১৩ সালে হওয়া মুজফ্ফরনগর দাঙ্গায় অভিযুক্ত ৩৮ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা তুলে নেওয়ার আর্জি জানাল যোগী সরকার। যদিও এই ঘটনায় ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পুলিশ। এই ঘটনাকে সম্মতি জানালো বিজেপিও।
আইনের চোখে কোন অপরাধীরই জাতি-ধর্ম বিচার হয়না। কিন্তু যোগী পাল্টে দিচ্ছেন সব কিছুই। বলা চলে আইন তুলে নিচ্ছেন নিজের হাতে। তাই দাঙ্গায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, বিস্ফোরক ও আগুনের ব্যবহার, ধর্মীয় জায়গা কলুষিত করা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মত অভিযোগ থাকলেও বেছে বেছে শুধু হিন্দুদেরই মুক্তি দিতে চান তিনি।
যে রাজ্যের স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ভুল পথে হাঁটেন তাহলে বাকিরাও যে তাঁকেই অনুসরণ করবেন তা বলাই বাহুল্য। তাই এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকার ১০ জানুয়ারি সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরই রাজ্যের বিশেষ সচিব জেপি সিং জেলা শাসককে ২৯ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে রাজ্যপাল রাম নায়েকও এ ব্যাপারে সম্মতি প্রদান করেছেন।
গত বছর বিজেপি সাংসদ সঞ্জীব বলয়ান লখনউতে যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করেন এবং হিন্দুদের ওপর থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার আর্জি জানান। তিনি যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গত ছ’বছর ধরে এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিন্দুরা এক লোক আদালত থেকে অন্য লোক আদালতে ছুটে বেড়াচ্ছে। খুন, ধর্ষণ বা অন্য কোনও বড় অপরাধের মত এই মামলা নয়। সরকার দ্বারা গঠন করা সিট বড়লোকদের ক্লিনচিট দিয়েছে আর ফাঁসিয়েছে গরীবদের। তাঁরা যদি হিন্দু হয় তবে আমার অপরাধ কোথায়? আমি তাঁদের জন্য সবসময় লড়ব এবং আমি সত্যিই ধন্যবাদ জানাচ্ছি যোগী আদিত্যনাথকে।’ উল্লেখ্য শুধু হিন্দু অভিযুক্তদেরই অভিযোগ মুক্ত করার আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। তাঁর নাম অভিযুক্তদের তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তিনি নাকি তাঁর নাম তোলার আর্জি জানাননি।