‘আমাদের অফিসারেরা এবং সাধারণ মানুষ এ বার নিশ্বাস ফেলার একটা জায়গা পাবেন’। রাজীব কুমার সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া। মমতার কথায়, ‘গণতন্ত্র ও সংবিধান ধ্বংস করতে উদ্যত দেশের শাসকদের ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে এই রায়। দেশের সংবিধান এর ফলে সুরক্ষিত থাকবে। নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দলের এ বার বোঝা উচিত, শুধু বন্দুক আর গো-রক্ষক দিয়ে দেশ চলে না। দেশ সংবিধান দিয়ে চালাতে হয়’।
ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা হবে না। আদালতের এই নির্দেশে আমরা কৃতজ্ঞ। মোদীর বিরুদ্ধে ২০১৯-এ আমাদের লড়াই আরও শক্তিশালী হল। নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দল যে ক্ষমতায় ফিরবে না, সেই বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। আজকের রায় দেশের জনতার জয়, রাজ্যবাসীর নৈতিক জয়, সংবিধানের জয়’। পাশাপাশি তদন্তে সহযোগিতার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তাকেও স্বাগত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘রাজীব কথা বলতে সব সময় রাজি এবং তা তিনি পাঁচ বার সিবিআইকে জানিয়েছিলেন। ওরা উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি’।
ঘটনা পরম্পরা বিশ্লেষণ করে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের অভিমত, সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যত মমতার পক্ষে গিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত রাজীবকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে রায় দিয়েছে। তাঁর সঙ্গে সিবিআই কোথায় ‘কথা বলবে’, তার একটি ‘নিরপেক্ষ’ জায়গাও স্থির করে দিয়েছে। ফলে মমতার এই ধর্নার সাফল্যকে সামনে রেখে সমগ্র বিরোধী শিবির ভোটের মুখে আবার একসঙ্গে দাঁড়ানোর মতো শক্ত জমি পেয়ে গেল। যার পরবর্তী পদক্ষেপ দিল্লীতে করা হবে বলে বিরোধীরা সম্মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রায় জানার পরে তাই বিরোধীরা একে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির পরাজয় বলে ব্যাখ্যা করছে। এক নেতার কথায়, ‘মমতাই শেষ পর্যন্ত টেক্কা দিলেন’।