দূষণ পরিমাপের নিরিখে কলকাতার স্থান যে সারা ভারতের অন্যান্য রাজ্য গুলোর তুলনায় বেশ উপরে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন পার্কে সৌরশক্তি চালিত আলো ব্যবহারের ফলে দূষণের মাত্রা কমছে। সম্প্রতি পুরসভার একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রধানত বৈদ্যুতিক শক্তির দ্বারা চালিত আলোর ফলে খরচ বেশি হয়। সেখানে এই সৌরশক্তির দ্বারা চালিত আলোর ফলে খরচ অনেকটাই বাঁচছে।
কলকাতার দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতায় বিভিন্ন পার্কে সৌরশক্তি ব্যবহারে প্রায় এক মাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান কমে দাঁড়িয়েছে ৫,৮৮৩.৯ কিলোগ্রাম। এই ভাবে এক বছরে প্রায় কমতে পারে ৭০,৬০৬.৮ কিলোগ্রাম। এর ফলে গড়ে বিদ্যুতের খরচ কমেছে প্রায় ৬০%। কলকাতা পুরসভা সুত্রের খবর অনুযায়ী, উত্তর কলকাতার কলেজ স্কোয়ার, দক্ষিণ কলকাতার পাটুলি উপনগরী উদ্যান, ম্যাডক্সস্কোয়ার, যতীন দাস পার্ক, বেহালার মোহিনী কুঞ্জ প্রভৃতি জায়গায় সৌরশক্তি ব্যবহারের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান অনেক কমছে। আপাতত কলকাতার ৮টি উদ্যানে সোলার সিস্টেম বসানো হয়েছে, এখন আরাও ৭টি জায়গায় সোলার সিস্টেম বসানোর জন্য সমীক্ষা চালানো হচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান যে, শীতে এমনিতেই দূষণের পরিমান অনেক বেড়ে যায়, সেখানে এই ব্যবস্থার ফলে শহরে দূষন এর মাত্রা কমবে। এবং তিনি আরো জানান যে, ভবিষ্যতে এই পরিবেশ বান্ধব সৌরশক্তির ব্যবহারের ওপর আরও গুরুত্ব আরোপ করা হবে। একটি পুর সমীক্ষায় জানা গেছে, সৌরশক্তি ব্যবহারের আগে ৭ পার্কে আলোর জন্য মোট বিদ্যুৎ লেগেছে ২৬,৭৮৪ কিলোওয়াট আওয়ার। সেখানে সৌরশক্তি ব্যবহারে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০,৮৫২ কিলোওয়াট আওয়ার।
উল্লেখ্য, এখনও আলো জ্বালানোর জন্য প্রধান জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার হয়। এবং এই কয়লা পুড়ে কার্বন সৃষ্টি হয় যা পরিবেশ দূষনের অন্যতম এবং প্রধান কারণ। আরেকটি ব্যাপার হল, তাপবিদ্যুৎ ব্যবহারে যে পরিমাণ খরচ হয়, সোলার সিস্টেমে সেই পরিমান বিদ্যুৎ তৈরী করতে অনেক কম খরচ হয়। তাই এবার পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুতের ওপরই নজর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা।