নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কৃষক সম্মেলনে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ধর্না মঞ্চ থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার শহরে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের চাপানউতোরে অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের পাশে দাঁড়াতে রবিবার রাত থেকেই অনশনে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তিনি সোমবার কৃষক সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি।
তবে ধর্না মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি সরকারকে তুলোধনা করে বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজনৈতিকভাবে আমাদের প্রশাসনকে হেনস্থা করতে চাইছে। নোংরা রাজনীতি করতে নেমেছে কেন্দ্র। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে ওরা। এটা মোদী সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ। এটা বরদাস্ত করা যাবে না।’ মমতার কথায়, ‘কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরই কৃষকদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। দেশে প্রায় ১২ হাজার কৃষক আক্রান্ত। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক আন্দোলন হলেও হুঁশ ফেরনি বিজেপির। নোটবন্দীর ফলে কৃষকরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
সিঙ্গুর আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মমতা জানান, এর আগেও তিনি কৃষকদের জন্যই টানা ২৬ দিন অনশনে বসেছিলেন। এরপরই কৃষকদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নোটবন্দীর পর থেকে কৃষকদের অসহায় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বহু কৃষক না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছেন। কেউ কেউ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে পারছেন না তাঁরা। কিন্তু আমরা কৃষি জমি নষ্ট করতে দিই না। অনশন করে আমি কৃষকদের সিঙ্গুর ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘কৃষকদের শস্যবীমা প্রকল্পে রাজ্য ৮০ শতাংশ টাকা দেয়। কেন্দ্রের কোনও ভূমিকা নেই তাতে। কেন্দ্র সরকারের টাকা রাজ্য নেবেও না। শুধু বক্তব্য বা প্রতিশ্রুতি দিলেই ক্ষমতায় থাকা যায় না। কৃষকদের জন্য সরকারের বহু প্রকল্প রয়েছে। কারণ কৃষি হল ভিত্তি।’ কৃষকদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘আপনাদের দুর্বলতা নিয়ে কেউ যেন রাজনীতি করতে না পারে। আমি আপনাদের জন্য জীবন দিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। আজও আপনাদের পাশে সবসময় আছি।’