৩৪ বছরের বাম শাসনে একাধিকবার ধর্নায় বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি যে ফের বিরোধী নেত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন একথা ভাবতে পারেননি অনেকেই। কিন্তু তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক প্রাজ্ঞতায় তিনি অনেক রাজনীতিককেই বলে বলে দশ গোল দেবেন। তাই তাঁর ধর্নার আলাদা গুরুত্ব আছে, সেটা বুঝছে সারা দেশ। মমতার লড়াই, সংবিধান রক্ষার লড়াই, মোদী সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই। সেই লড়াই লড়তেই মেট্রো চ্যানেলের ধর্নামঞ্চে অবতীর্ন হয়েছেন মমতা। আর এই লড়াইয়ে বিজেপি বিরোধী সমস্ত দলগুলিকে পাশে টেনে নিতে পেরেছেন তিনি। স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে তিনি রণংদেহি। মুখ্যমন্ত্রী থেকে হয়ে উঠেছেন জাতীয় বিরোধী নেত্রী।
কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মমতার লড়াই শুরু হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে থেকে। পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাংলোয় বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে সিবিআই-এর হামলা সেই লড়াইকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেল।
তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘৪০ জন সিবিআই অফিসার পার্ক স্ট্রিটে রাজীব কুমারের বাসভবনের সামনে এসেছিল। তাদের একটা গাড়িতে চড়িয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়’। গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘সিবিআই কীভাবে ওয়ারেন্ট ছাড়া পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে ঢুকতে চেষ্টা করে?’ মমতার অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী যা চান, অজিত ডোভাল তাই করেন। তিনিই সিবিআইকে নির্দেশ দিচ্ছেন’। মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘কেন্দ্র বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দেখুক’।
মমতার অভিযোগ, গত মাসে কলকাতায় বিরোধী সমাবেশের পরে মোদী সরকার তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগেরও অভিযোগ তোলেন তিনি। মোদী বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিনটি ‘টি’-এর সাহায্যে মধ্যবিত্তের সব আশা ভরসাকে ধ্বংস করছে। তিনটে ‘টি’ হল তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স। মমতা ধর্নায় বসার পরে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন প্রায় সমস্ত বিরোধী নেতা-নেত্রীরাই।