মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হামেশাই বলে থাকেন বাংলায় রামের নতুন দোসর হয়েছে বামেরা। রাম-বাম এখন এক হয়ে গেছে। তিনি বারবার এমন দাবিও করেছেন যে, ‘এ রাজ্যে সিপিএম বিকিয়ে গিয়েছে বিজেপির কাছে। কোনও নীতি-আদর্শই নেই ওদের। ওরা এখন সাইনবোর্ড সর্বস্ব একটা দলে পরিণত হয়েছে। আর সেই সাইনবোর্ডও বিজেপিই বানিয়ে দিচ্ছে।’ তিনি যে ভুল কিছু বলেননি, আবারও মিলল তার প্রমাণ। আগামী ৩রা ফেব্রুয়ারি রবিবার হলেও, ওদিন বামেদের ব্রিগেড বলেই সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতো ট্রেন চালাবে পূর্ব রেল। সে জন্য বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে মোদী সরকারের রেল মন্ত্রক। যার ফলে আরও কিছুটা স্পষ্ট হল বাম-রামের পারস্পরিক বোঝাপড়ার চিত্রটা।
এমনিতে রবিবার প্রায় অনেক ট্রেনই বাতিল থাকে। সপ্তাহান্তে ছুটির দিনে কোনও ব্যক্তিগত কাজে যাওয়ার থাকলে বা পরিবারের সঙ্গে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার থাকলে ট্রেনের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। তাতে রেলের কোনও হেলদোল নেই। কিন্তু ৩ ফেব্রুয়ারি, রবিবার কমরেডদের কথা ভেবেই বিকেল চারটে পর্যন্ত সমস্ত ট্রেন বাকি ছ’দিনের সূচি মেনেই চালানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যা একপ্রকার নজিরবিহীন। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত কেন্দ্র সরকারের অধীনে থাকা রেলের?
আসলে গত ২৮ তারিখ সিপিএমের তরফে একটি প্রতিনিধি দল পূর্ব রেলের ডিআরএম-এর কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। তাতে সপ্তাহান্তের ছুটির দিনেও নিজেদের সুবিধার্থে ট্রেন চালানোর অনুরোধ জানায় বামেরা। যদিও এই ব্যাপারটিকে ‘বন্ধুর কাছে আবদার করা’ই বলছেন রাজনীতিবিদদের একাংশ। জানা গেছে, তারপরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। বামেদের স্বার্থে জারি করা হয়েছে ‘বিশেষ’ বিজ্ঞপ্তি। যাতে বলা হয়েছে, হাওড়া-বর্ধমান মেন এবং কর্ড শাখা, হাওড়া-ব্যান্ডেল এবং হাওড়া-কাটোয়ায় শাখায় ট্রেন চলবে অন্যান্য দিনের মতো।
রাম-বাম যে এক হয়ে গেছে, আবারও তার প্রমাণ মিলতেই কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। শাসক দলের এক মুখপাত্রের কথায়, ‘লোক হবে না বুঝতে পেরে সিপিএম কাঁদুনি গাইতে শুরু করেছে।’ এর পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন যে, ‘দিদি তো আগেই বলেছেন, রাম ও বাম এখন এক হয়েছে। দিল্লী থেকে এলো রাম সঙ্গে জুড়ে গেল বাম।’ যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি আলিমুদ্দিনের কোনও নেতাই। আবার বামেদের মতোই মুখে কুলুপ এঁটেছে বন্ধু রাম।