শনিবার ঐতিহাসিক ব্রিগেডের মঞ্চে বিরোধী-মহাজোটের অবয়ব দেখিয়ে মোদী-সরকারের ‘এক্সপায়ারি ডেট’ ঘোষণা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের তাবড় তাবড় শীর্ষনেতাদের পাশে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘জনতা দিমাগ বনা লিয়া। এই সভাই বিজেপির শেষের শুরু। বদল হবেই। কেউ রুখতে পারবে না। এই সভা ইতিহাসের প্রয়োজনে।’ মূলত তাঁর ভাষণ শুনতেই সেদিন ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে আছড়ে পড়েছিল জনসমুদ্র। তাই ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার লক্ষ্যে হওয়া জনসভায় কত লোক এসেছিল তা জানতে ব্যাকুল প্রধানমন্ত্রীর দফতরের। ব্রিগেডে ওদিন মোট কত লোক হয়েছে তা জানতে চেয়েছে কেন্দ্র।
সূত্র থেকে পাওয়া খবর, শীঘ্রই সেই রিপোর্ট যাচ্ছে দিল্লীতে। তবে শুধু অনুমান করে নয়, রীতিমতো অঙ্ক কষেই দিল্লীতে পাঠানো হচ্ছে ওই রিপোর্ট। রিপোর্টে ময়দানের মাপ দিয়ে একজন মানুষ কত ফিট জুড়ে দাঁড়াতে পারে সেই মাপজোক করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, হিসেব অনুযায়ী ভিক্টোরিয়া থেকে ব্রিগেডের সামনে সারি পর্যন্ত জায়গার দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটার, ফোর্ট উইলিয়ামের দিক থেকে ব্রিগেডের মাঠ পর্যন্ত প্রস্থ ২১৫ মিটার। একজন মানুষ দাঁড়াতে ৪ স্কোয়ার ফিট, বসে থাকলে সাড়ে ৫ স্কোয়ার ফিট জায়গা লাগে। সেসব বিচার করেই পুলিশ তাদের নিজস্ব রিপোর্টে জানাচ্ছে ব্রিগেড দেখার জন্য ৯ লাখের বেশি লোক সমাবেশ হয়েছে। কারণ শুধু ব্রিগেড গ্রাউন্ডেই নয়, ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার, টি বোর্ডের মতো শহরের আনাচে কানাচে লোকেরা দাঁড়িয়ে জায়েন্ট স্ক্রিনে বক্তব্য শুনেছে মানুষ। সূত্রের খবর এই রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে দিল্লীতে।
জানা গেছে, এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে দুটি বিষয় করা হবে। এক, বিজেপি’র ব্রিগেডে এই সমাবেশের থেকে বেশি লোক আনার টার্গেট করা হবে। বার্তা দেওয়া যে, তাদের সমাবেশে লোক বেশি হয়েছে। ফলে মানুষ তাদের চায়। দুই, এই হিসাবের ওপর নির্ভর করে লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় সংগঠনের স্ট্র্যাটেজি সাজানো হবে। যাতে নির্বাচনে জোর টক্কর দেওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় ব্রিগেডের জনসমাগমের সংখ্যা জানতে চায় না কখনও। কিন্তু এবার তাই করা হল, যা এককথায় বিরল। ফলে বিজেপি বিরোধীতায় ব্রিগেডে আসা মানুষের ঢল দেখে যে অস্বস্তিতে কেন্দ্র, তা বলাই বাহুল্য।