আসন্ন লোকসভা ভোটে দেশের স্বার্থে দিল্লীর মসনদ থেকে যে কোনও মূল্যে মোদীকে সরানোর লক্ষ্যে আজ ঐতিহাসিক ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন বাংলার জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সমাবেশে যোগ দেওয়া দেশের সমস্ত শীর্ষনেতাদের কণ্ঠে এখন একই সুর। মমতাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি ব্রিগেড সমাবেশে বিপুল জনস্রোত দেখে সর্বাগ্রে উচ্ছ্বাসটা ব্যক্ত করলেন তরুণতম বক্তা তথা এ দিনের সমাবেশের প্রথম বক্তা হার্দিক প্যাটেল।
তার কিছুক্ষণ পরেই ভিড়ের চেহারা দেখে একই রকম বিস্ময় ব্যক্ত করলেন আরএলডি প্রধান অজিত সিংহের ছেলে জয়ন্ত। অবাক বাকিরাও। সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব যেমন বললেন, ‘যত দূর পর্যন্ত চোখ যাচ্ছে, দেখছি শুধু মাথা আর মাথা।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা মেগা সমাবেশ এ ভাবেই চোখ ধাঁধিয়ে দিল জাতীয় রাজনীতির রথী-মহারথীদের। আর কোনও প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে এই প্রথম বারই এত বড় কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দিল। এই কারণেই ঐতিহাসিক এবারের ব্রিগেড।
এদিন ব্রিগেডের মঞ্চে হাজির কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাট থেকে অরুণাচল প্রদেশের প্রথম সারির বিরোধী নেতারা। সব মিলিয়ে ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া’র সার্বিক ছবি দেখা গেল ব্রিগেডের সভায়। ‘মোদী হঠাও দেশ বাঁচাও’ স্লোগান তুলে এই মঞ্চে সামিল হয়েছেন শরদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদব, অভিষেক মনু সিংভি, বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর প্রতিনিধি সতীশ মিশ্র, চন্দ্রবাবু নায়ডু, যশবন্ত সিন্হা, অরবিন্দ কেজরীওয়াল, এইচ ডি দেবগৌড়া, ওমর আবদুল্লা, ফারুক আবদুল্লা, এম কে স্ট্যালিন, গেগং আপাং, হেমন্ত সরেনের মতো প্রথম সারির নেতারা। বিরোধী ঐক্যের এই মঞ্চে হাজির হয়েছেন হার্দিক প্যাটেল, জিগ্নেশ মেবানিও।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি এবং গণতান্ত্রিক কাঠামো অকেজো করে দেওয়ার বিরুদ্ধে সকাল থেকেই একের পর এক নেতা সরব হয়েছেন। মোদী সরকারের অধীনে দেশ বিপর্যস্ত। এই সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হয়ে লড়তে হবে। সেই বার্তা দিতেই তিনি এই মঞ্চে হাজির হয়েছেন বলে জানান যশবন্ত সিনহা। তিনি বলেন, ‘৫৬ মাসে দেশ বিপর্যস্ত। দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের আর্থিক ব্যবস্থা চৌপাট হয়ে গিয়েছে।’
২০১৯-এ নতুন সরকার গড়ার, ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার ডাক দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একমঞ্চে বিরোধীদের সামিল করতে পেরেছেন তার প্রশংসা করেন প্রত্যেক নেতাই। সকলেই একবাক্যে স্বীকার করলেন, ২০১৯-এর নির্বাচনের প্রথম ঘণ্টাটাই বাজিয়ে দিলেন মমতাই।