সাগরদ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মুড়িগঙ্গার উপর সেতু তৈরি করবে রাজ্য সরকার। শুক্রবার বাবুঘাটে গঙ্গাসাগরের তীর্থযাত্রীদের শিবিরে এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বেশ কয়েক বছর আগে কেন্দ্র সাগরদ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর একটি রেল-সড়ক সেতু তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু কথা দিয়েও কথা রাখেনি কেন্দ্র৷ তাই বাংলার মানুষের সুবিধার্থে সবসময়ের মতই এগিয়ে এল সরকার। সেতু তৈরিতে আনুমানিক খরচ হবে দেড় হাজার কোটি টাকা। মুখ্যসচিব মলয় দে’কে মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে সেতু তৈরির বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সাগরমেলায় তীর্থযাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই ভিনরাজ্যের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁদের উদ্দেশে হিন্দিতে ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাগরমেলাকে সামনে রেখে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ তাঁর সরকার করেছে। আগের সরকার যে তীর্থ কর বসিয়েছিল, সেটাও তাঁরা তুলে নিয়েছেন। তীর্থযাত্রীরা যাতে মেলায় গিয়ে ধর্মীয় ভেদাভেদের চক্রান্তের শিকার না হন, তার জন্য এদিন সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের এই অবস্থা আগে ছিল না। এভাবে ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা আগে হয়নি। এটাকে আমরা অপসংস্কৃতি বলি। আমরা সবাইকে নিয়ে চলি।’
নরেন্দ্র মোদি সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর সাগরের বন্দর প্রকল্পটি স্থগিত রেখে পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে একটি বন্দর গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরই কেন্দ্র সেতু তৈরির ব্যাপারে আগ্রহ হারায়। মুখ্যমন্ত্রী গতকালের সভায় তাজপুরে বন্দরের প্রসঙ্গটি টেনে বলেন, ‘ওই বন্দরের ৭৪ শতাংশ অংশীদারি কেন্দ্রীয় সরকারকে ছেড়ে দিয়েছিল রাজ্য। শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে কেন্দ্র মুড়িগঙ্গার উপর লোহার বা কংক্রিটের সেতু তৈরি করে দেবে, এমনটাই ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তিন-চার বছর কেটে গেলেও কেন্দ্র কিছুই করছে না। আমরা কেন্দ্রের কাছ থেকে ‘ভিক্ষা’ চাই না। আমরা নিজেরাই টাকা জোগাড় করে ওই সেতু গড়ব বলে ঠিক করেছি।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কলকাতায় আরও চারটি ফ্লাইওভার হবে।’ এই অনুষ্ঠান থেকে বাটানগরে শহরের দীর্ঘতম ফ্লাইওভার এবং এনআরএস হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার অত্যাধুনিক যন্ত্রের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।