মোদী সরকার রাজ্যগুলিতে সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে বলে নদীয়া থেকে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘মোদী সরকারের আচরণ হিটলার-মুসোলিনির থেকেও ভয়ঙ্কর’। শুধু তাই নয়, রাজ্যের নানা প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত চুরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সেই সঙ্গে ঘোষণা করে দেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে আর কোনও টাকা দেবে না রাজ্য সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার নদীয়ার কৃষ্ণনগরে ‘কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়’-এর শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোষণা করেন রাজ্যের মেয়েদের বিনা খরচায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হবে। নদীয়ার উন্নয়নে কালনা থেকে শান্তিপুর পর্যন্ত ১১০০ কোটি টাক খরচে ব্রিজ তৈরি হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার কলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ২০০০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২৫০০ টাকা স্কলারশিপ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
নদীয়ার এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই একের পর এক ইস্যুতে মোদী সরকারকে আক্রমণ করে কার্যত লোকসভা ভোটের ঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদী সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘এই সরকার চেঙ্গিস খাঁ, হিটলার, মুসোলিনীর থেকেও ভয়ঙ্কর। দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করা হচ্ছে। পাঠান কত সিবিআই আছে, কত ইডি আছে। ভয় দেখিয়ে আমার মুখ বন্ধ করা যাবে না’। রাজ্য সরকারের প্রকল্পের কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে তীব্র প্রতিবাদ করে মমতা বলেন, ‘রাজ্যের টাকা নিয়ে দালালি করছেন মোদী। একাধিক সরকারি প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার, আর কৃতিত্ব নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। প্রচার করা হচ্ছে কেন্দ্র সরকার টাকা দিচ্ছে’। এরই প্রতিবাদে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে রাজ্য সরকার টাকা দেবে না বলে ঘোষণা করেন মমতা।
সংরক্ষণ নিয়েও মোদী সরকার রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, ‘৫০ শতাংশ সংরক্ষণকে ৬০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে ক্ষতি হয়েছে উচ্চবর্ণের মানুষেরই। এতদিন ৫০ শতাংশ জায়গা সাধারণদের জন্য বরাদ্দ ছিল। তাতে ১০ শতাংশ কমে যাওযায় আরও বেশি চাকরির সংকট তৈরি হবে। যাঁদের সত্যি চাকরির প্রয়োজন তাঁরা চাকরি পাবেন না’। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘ভোটের আগে ভাঁওতা, প্রহসন আর লুঠের রাজনীতি চালাচ্ছে মোদী সরকার’।
রাজ্য থেকে টাকা কেটে নিয়ে গেলে তার ভাগ রাজ্য সরকারকে দিতে হবে বলে দাবি করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘রাজ্য থেকে আয়কর তুললে তার ভাগ রাজ্যকে দিতে হবে’। অন্যান্য রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে মমতার বক্তব্য, ‘নজর রাখুন। ওরা (কেন্দ্র) রাজ্যের কাজ নিজেদের নামে চালাচ্ছে’। নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের ফাঁদে পা না দিয়ে জনতাকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন তিনি।