বছরের শুরুতেই কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো এবার নিজেদের জমির অধিকার পেলেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবারই তাঁদের হাতে জমি সংক্রান্ত নথিপত্র তুলে দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ভারতের নাগরিকত্ব লাভ করেন বাংলাদেশি ছিটমহলের বাসিন্দারা। এর পর এই নব্য ভারতীয়দের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের নজির রেখেছে মমতা সরকার। রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই তাঁদের জব কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সাবেক ছিটমহলগুলিতে উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে রাজ্য।
প্রথম থেকেই ছিটমহলবাসীর জোরালো দাবি ছিল, তাঁদের জমির অধিকার দেওয়া হোক। তাঁদের হাতেই তুলে দেওয়া হোক নির্দিষ্ট জমির নথিপত্র। গতকাল তুফানগঞ্জ, দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকার সাবেক ছিটমহলবাসীর হাতে জমির প্রত্যয়িত খসড়া খতিয়ান বিতরণ করা হয়। তুফানগঞ্জ ও দিনহাটায় প্রত্যয়িত খসড়া খতিয়ান বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা।
বৃহস্পতিবার সাবেক ছিটমহলের মোট ১৩,৫৬০ জন রায়তের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই খসড়া খতিয়ানের নথি। মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৭,১১০ একর। এর মধ্যে তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের সাবেক ছিটমহল এলাকার ১৫৬ জন, দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের ১,৩১৮ জন, দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের ৬,২৮৩ জন, মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের ৫৬৯ জন, শীতলকুচি ব্লকের ৩,৫৬৪ জন এবং মেখলিগঞ্জ ব্লকের ১,৬৭০ জন রায়তের হাতে খতিয়ানের কাগজ আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ-সহ অন্যরা।
মন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক ছিটমহলবাসীদের এই দাবি পূরণ করতে প্রথম থেকেই সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই ১৯ নভেম্বর রাজ্য বিধানসভায় একটি সংশোধনী বিল এনে সর্বসম্মতিক্রমে তা পাশ করিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই খসড়া খতিয়ানের নথি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই খতিয়ানে কোনও ভুলভ্রান্তি থাকলে বা কারও কোনও আপত্তি থাকলে, আগামী এক মাসের মধ্যে স্থানীয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে ৯ নম্বর ফর্ম পূরণ করে রায়তরা তাঁদের আপত্তি জানাতে পারবেন।’
মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপ্লুত সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। সরকারি উদ্যোগে জমির অধিকার পাওয়ার পর এখন খুশির আমেজ গোটা ছিটমহল জুড়ে।