বহু বছর ধরেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলের টিফিন বা জলখাবারের জন্য মায়েরা চোখ বন্ধ করে ভরসা করতেন ম্যাগির ওপর। স্বাদ এবং নামমাত্র তৈরির সময় এই দুইয়ের ওপর ভরসা করেই একচ্ছত্র বাজার দখল করে রেখেছিল নেসলে কোম্পানির এই পণ্যটি। কিন্তু ২০১৫ সালে দেশজুড়ে ম্যাগির নমুনা পরীক্ষা করে তাতে অত্যধিক মাত্রাতে সিসা মেলার পর অস্তিত্ব সংকটে পরে ম্যাগি। তবে তার পরে আবার নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে ফের শুরু হয়েছিল বিক্রি। এরই মাঝে আবার প্রকাশ্যে এলো বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি । বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে নেসলের পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে ম্যাগিতে সিসা রয়েছে।
আদালতে এই স্বীকারোক্তির সঙ্গে সঙ্গে আবারও প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে গেল ম্যাগির খাদ্য সুরক্ষা। শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের আইনজীবী প্রশ্ন করেছিলেন ‘এটাতে কী সিসা রয়েছে?’ তখনই নেসলের আইনজীবী জানান ‘সিসা থাকলেও সেটি নিরাপদ সীমার মধ্যেই রয়েছে। তাতে কারোর ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।’ অর্থাৎ পরোক্ষে সিসার অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে ম্যাগি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাদ্য। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই ম্যাগি খান। তাঁদের শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে এই সিসা।
যদিও নেসলের আইনজীবীর বক্তব্য অনুযায়ী ম্যাগিতে নিরাপদ মাত্রায় সিসা থাকার কথা গুরুত্ব পায়নি বিচারপতির কাছে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন ‘তাহলে কেন আমরা সিসা-যুক্ত ম্যাগি খাচ্ছি?’ শীর্ষ আদালত জানিয়েছে সিএফটিআরআই-এর রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই এনসিডিআরসিতে মামলাটির শুনানি ফের চালু করা যাবে।
অন্যদিকে ম্যাগির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিল বিহারের মুজফরপুর আদালত। মঙ্গলবার বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চন, মাধুরী দীক্ষিত ও প্রীতি জিন্টার বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দেয় মুজফরপুর আদালত। এফআইআরে নাম রয়েছে নেসলে ইন্ডিয়ার আধিকারিকদেরও।
সব মিলিয়ে ম্যাগির ভবিষ্যৎ যে বেশ অন্ধকার তা বেশ স্পষ্ট বৃহস্পতিবারের শুনানির পর।