রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে চালু হতে চলেছে রিমোট চালিত শয্যা বা রোবট বেড। এই বিছানায় শুয়ে রোগীরা কারও সাহায্য না নিয়ে শয্যা উপরে তুলতে বা নামাতে পারবেন। বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইডেন বিল্ডিংয়ের তিনতলায় নতুন লেবার রুমের উদ্বোধন হয়। সেখানেই বারোটি শয্যার মধ্যে রয়েছে দু’টি রিমোট চালিত রোবট বেড। এমনটাই জানালেন মেডিক্যালের সুপার ডঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস।
আপাতত নর্মাল ডেলিভারি করানোর কাজে ব্যবহার করা হবে এই নতুন বেডগুলি। কিন্তু প্রয়োজনে প্রসূতিকে এই বেডে চড়িয়ে ওয়ার্ডে বা হাই ডিপেডেন্সি ইউনিট-এ স্থানান্তরিত করা যাবে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে লেবার রুমে এমন রিমোট চালিত শয্যা এই প্রথম। এমনটাই বলেছেন মেডিক্যালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডঃ পার্থ মুখোপাধ্যায়। তিনি আরও জানালেন, ‘আশা করছি এই শয্যা প্রসূতিদের সাহায্য করবে। উপকৃত হবেন ডাক্তার-নার্সরাও।’
শারীরিক সুবিধার জন্য অনেক সময় বিছানার ঢাল বদলাতে হয়। নার্সরা যথেষ্ট সাহায্য করেন। রিমোট চালিত বেড হলে রোগী নিজেই বিছানার সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে, রিমোট চালানোটা জানতে হবে। নাহলে আবার হিতে বিপরীত হবে। নতুন লেবার রুমের পাশেই মোট ৯ শয্যার এইচডিইউ খোলা হচ্ছে। প্রসবের পর অনেক প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজন হয়। পার্থবাবু জানালেন, রিমোট চালিত শয্যা দু’টি তো বটেই বাকি ১০টি শয্যার গতিবিধিও ম্যানুয়ালি এদিক-ওদিক করা যাবে। চাকাও লাগানো আছে। ফলে রোগীকে লেবার রুম থেকে সরাসরি ওয়ার্ডে বা এইচডিইউ-তে নিয়ে আসা যাবে। লেবার রুমের পাশে থাকছে দু’টি ৬ শয্যার অবজারভেশন ওয়ার্ড ও একটি ৮ শয্যার ট্রায়াজ রুম।
মেডিক্যালের ইডেন হাসপাতালে প্রায় তিনশো বেড রয়েছে। সবটাই প্রসূতিদের জন্য। বছরে প্রায় ১৪ হাজার প্রসব হয় এখানে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ নর্মাল ডেলিভারি। সুতরাং, লেবার রুমের গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। আগে ওয়ার্ডের তিন জায়গায় ছড়িয়ে ছিল লেবার রুম। ফলে, নজরদারি চালাতে কিছুটা সমস্যা হত ডাক্তার-নার্সদের। নতুন লেবার রুম আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণের পরিবেশ তৈরি করবে। এমনই মত মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী ডা. নির্মল মাজির।