দলীয় স্তরে কাউন্সিলরদের বৈঠক শেষে যেদিন ফিরহাদ হাকিমের নাম মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিল সেদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, শহরের যে সমস্ত এলাকাতে পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে সেখানে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে সমস্যা মেটানোই হবে প্রধান লক্ষ্য। মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হয়ে এই একই কথা বলেছিলেন ফিরহাদ। সেই কথা রাখতেই যাদবপুর, টালিগঞ্জ এবং বন্দর এলাকাতে পানীয় জলের সঙ্কট কাটাতে গৃহীত নয়টি জল প্রকল্পের কাজকে ত্বরান্বিত করতে আর ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার।
পুর দফতর সূত্রে খবর, ওই এলাকাগুলিতে যাতে জল সঙ্কট তাড়াতাড়ি মিটে যায় এবং সাধারণ মানুষের যাতে সুবিধা হয় তার জন্যেই এই আর্থিক বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এই নয়টি জল প্রকল্পের খাতে মোট ৬৭ কোটি ১৩ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা অনুমোদিত হয়েছে। যে নয়টি জল প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলি পুরসভার ১০৮, ১১০, ৫৮, ১০১, ১০৬, ১০৯ এবং ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের।
এসব ছাড়াও ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের লেক গার্ডেনসের বাঙুর পার্কে ভূগর্ভস্থ জলাধার এবং বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এই কাজে খরচ হরে ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। জানা গিয়েছে, ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দপুরে ওভারহেড রিজার্ভারের ক্ষমতা বাড়াতে খরচ করা হচ্ছে ৭ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা এবং ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের পাটুলির ওভারহেড রিজার্ভারের ক্ষমতা বাড়াতে খরচ করা হচ্ছে ৮ কোটি ৮২ লক্ষ টাকারও বেশি। ইএম বাইপাস লাগোয়া ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাটগাছিয়ায় নতুন ভূগর্ভস্থ জলাধার সহ পাম্পিং স্টেশন তৈরির জন্য খরচ করা হচ্ছে ৪ কোটিরও বেশি।
এছাড়া ৪ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা খরচ করে ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের অচেনা পার্কে, ৪ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা খরচ করে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের কায়স্থপাড়ায় এবং ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চসায়রে জলাধার তৈরি করা হচ্ছে।
বেহালার জেমস লং সরণী থেকে পাইপলাইন মারফত পরিস্রুত পানীয় জল টালিগঞ্জে নিয়ে আসার একটি প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে। একইভাবে ওয়াটগঞ্জ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জন্য হুগলি নদীর ধারে তক্তাঘাটে দৈনিক ১৫ মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পাম্পিং স্টেশনও তৈরি করা হচ্ছে। পুর দপ্তরের সূত্র জানিয়েছে, টালিগঞ্জে পাইপলাইন মারফত পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পটি ১৫ কোটি টাকার বেশি। তক্তাঘাটে পাম্পিং স্টেশনের জন্য খরচ করা হবে ১৬ কোটি ২৭ লক্ষ টাকারও বেশি। যত তাড়াতাড়ি সমগ্র প্রকল্পটি শেষ করা যায়, সেই দিকেও নজর রেখেছেন নতুন মেয়র। মানুষের জন্যে কাজ করতে এসে মানুষের আসুবিধার সাথে নূন্যতম আপোষ যে তিনি বা রাজ্য সরকার কখন করবেন না, সেই কথাই আবার প্রমাণিত হল।