২০১৭ সালের ৮ জুন দার্জিলিংয়ের ভানুভবনের সামনে হামলার ঘটনায় প্রাক্তন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং, রোশন গিরি-সহ ৭২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল সিআইডি। সোমবার দার্জিলিং সদর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় রাজ্যের এই তদন্তকারী সংস্থা। ওই চার্জশিটে গুরুংয়ের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং এবং ছেলে অভিষেকের নামও রয়েছে। এছাড়াও নাম রয়েছে দীপেন মালে, প্রকাশ গুরুং, সরোজ থাপা-সহ বিমলপন্থী একাধিক নেতার।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৮ জুন দার্জিলিংয়ের ভানুভবনে হামলা চালায় মোর্চা সমর্থকরা। হামলার ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক ছিল। হামলায় বহু নথি নষ্ট হয়ে যায়। ফাইলপত্র নষ্ট হয়ে যায়। এরপর পাহাড়ে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক হিংসা চলে। তাতে প্রাণ হারান পুলিশ কর্মী-সহ নিরীহ বেশ কয়েকজন পাহাড়বাসী। ৯ জুন দার্জিলিং সদর থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। এবং গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই বিমল গুরুং, প্রকাশ গুরুং, রোশন গিরি, অশোক ছেত্রী, ডি কে প্রধান, তিলক রোকা ও আশা গুরুং-দের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।
ঘটনার পর থেকেই সপরিবারে পলাতক বিমল এবং অন্যরা। ফলে পুলিশ বিমল-সহ বাকিদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ বাহিনী দফায় দফায় অভিযান চালায়। বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় দেশদ্রোহিতার মামলাও দায়ের হয়। তবে একাধিক নেতা গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত বিমল অধরাই রয়ে যায়। তাঁকে ধরতে গিয়ে মোর্চার সমর্থকদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল দার্জিলিং থানার এসআই অমিতাভ মালিকের। এরপর গোপন আস্তানা থেকে মাঝেমধ্যে অডিও এবং ভিডিও বার্তা দিয়ে প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টা করলেও সামনে আসেনি সে। প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম হয়ে নেপালে গা ঢাকা দিয়েছেন মোর্চা নেতা এমনই অনুমান পুলিশের।
সিআইডি সূত্রে খবর, চার্জশিটে খুনের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের উপর হামলা-সহ একাধিক ধারা যুক্ত করা রয়েছে। এই মামলার তদন্তে ৫০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন গোয়েন্দারা। ৪৫ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে, সিআইডির এক কর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগ দায়ের হওয়ার দেড় বছরের মাথায় এই চার্জশিট জমা দেওয়া হল।