এবার শবরীমালার কোপে পড়লেন কেরলের সমাজকর্মী রেহানা ফতিমা। গত ১৯ অক্টোবর শবরীমালায় বিগ্রহ দর্শনের জন্য তীর্থযাত্রায় হেঁটেছিলেন রেহানা। তবে বিগ্রহ দর্শন করতে না পারলেও সেসময় ভক্তদের রোষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন তিনি। তীর্থযাত্রায় হাঁটার সময়ই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা ভেঙে দিয়েছিল তাঁর বাড়ি। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতারও করে কেরল পুলিশ। আর আজ তাঁকে সাসপেন্ড করল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল)। এই সংস্থাতেই টেলিকম টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন রেহানা।
প্রসঙ্গত, ২৮ সেপ্টেম্বরের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, শবরীমালার মন্দিরে সব বয়সের মহিলারাই ঢুকতে পারবেন। তবে শবরীমালার মন্দির কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে গিয়েই ১৮-২৫ বছর বয়সীদের মন্দিরে ঢোকার ক্ষেত্রে ফের বিধিনিষেধ জারি করে। এখনও পর্যন্ত ১৮-২৫ বছর বয়সী কোনও মহিলাই এই মন্দিরে ঢুকতে পারেননি। ১৯ অক্টোবর রেহানা ফতিমা সেই চেষ্টা করলেও রাস্তার মাঝপথেই ভক্তদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে ফিরে আসেন তিনি। এরপর থেকেই একের পর আক্রমণের শিকার হয়েছেন রেহানা। কিন্তু ব্যক্তিগত আচরণের জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ে গেছে বিভিন্ন মহলে।
১৯ অক্টোবরই কেরলের কোচিতে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁর বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল। কারা ভেঙেছিল, তা এখনও জানাতে পারেনি কেরল পুলিশ। কিন্তু ৩০ অক্টোবর কেরল সংরক্ষণ সমিতি নামের একটি সংস্থা যখন তাঁর বিরুদ্ধে শবরীমালা মন্দিরের ঐতিহ্যে আঘাত হানার অভিযোগ আনে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে ফেলে তারা। অন্যদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে কেরল হাইকোর্টে যখন আগাম জামিনের আবেদন করেন ফতিমা, তখনও তাঁকে আগাম জামিন দেয়নি কেরল হাইকোর্ট।
রেহানার বিরুদ্ধে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত হাজারো চাপের মুখে পড়েলও নতিস্বীকার করেননি কেরলের এই সমাজকর্মী। তাঁর দাবি, যা করেছেন আইন মেনেই করেছেন, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। এরপরই তাঁকে বদলি করে বিএসএনএল। কিন্তু আজ হঠাতই তাঁকে সাসপেন্ড করে দেয় এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠে গেছে। সকলেরই দাবি, যেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী দোষী নয় রেহানা, সেখানে তাঁকে শাস্তি দিয়ে শীর্ষ আদালতকেই অবমাননা করেছে কেন্দ্র সরকারের অধীন এই সংস্থা।