রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই তিনি শক্ত হাতে রেশনিং ব্যবস্থার হাল ধরেন। সেই থেকেই রেশনে সরকারি বরাদ্দ মাথাপিছু মাসিক ৮ কিলো চাল এবং ৩ কিলো গম। তাই কেউ ‘ভাত খেতে পায়নি’ বললে তা বিশ্বাস করতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এ রাজ্যে অনাহারে কারও মৃত্যু ঘটতে পারে, এ কথা মানতেও নারাজ তিনি।
সোমবার জেলা সফরে এসে ঝাড়গ্রামের জামবনিতে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী পরিস্কার বলেন, ‘কেউ যদি বলে বেচারা ভাত খেতে পায়নি, আমি তা বিশ্বাস করব না। কারণ বিরোধী থাকাকালীন সময়ে এখানে যখন আসতাম, আমায় এখানকার মানুষ অভিযোগ করতেন বছরের অর্ধেক সময় না খেয়েই থাকেন তাঁরা। পিঁপড়ে সেদ্ধ খেয়ে দিন কাটান। কিন্তু আমরা সরকারে আসার পর এখন সকলে দু’টাকা কেজি চাল, গম পান। জনপ্রতি মাসে ৮ কেজি চাল আর ৩ কিলো গম দেওয়া হয় সরকার থেকে। অর্থাৎ একজন মাসে ১১কেজি চাল-গম পান। একটা পরিবারে ৫ জন থাকলে সেই পরিবার মাসে ৫৫ কেজি চাল-গম পান। আমি শুনেছি অনেকের এত পরিমাণ চাল-গম লাগেনা। অনেকে আবার তা বিক্রিও করে দেন।’
উশৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য লালগড়ের পূর্ণাপানিতে সম্প্রতি সাত শবরের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু জঙ্গলমহলে উন্নয়নের ধারাকে থমকে দিতে বিরোধীরা অপপ্রচার চালায় ওই ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে অনাহারেই। পূর্ণাপানির কয়েক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে গতকাল সেই অভিযোগ খারিজ করে দেন মমতা। একইসঙ্গে রেশন ডিলারদেরও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার দু’টাকা কিলো চাল দেয় বিলি করার জন্য। কখনও সেই চালের টাকা নিয়ে তা থেকে পঞ্চাশ গ্রাম কেটে নিলে ডিলারের লাইসেন্সও কেটে নেব।’
এ দিন বিকালে প্রশাসনিক বৈঠকেও এই বিষয় উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিডিওরা, থানার ওসিরা এলাকায় যখন ঘুরবেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে রেশন দোকানে একটু খোঁজ নেবেন। দেখবেন যে সব মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁদের কাজ হচ্ছে কি না।’ অফিসারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রচারটাও করতে হবে। দেখতে হবে মানুষ যেন ভাতটা খায়। প্রচার করুন, ভাত খান। ওটা বিক্রি করার জন্য দেওয়া হয় না।’