রাজ্যসরকারের কর্মচারীদের সুযোগসুবিধা দিতে সবসময়ই উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে বিভিন্ন রকম সহায়তা পাচ্ছে তাঁরা। এবার সরকারি কর্মচারীদের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন সহ বিভিন্ন স্বশাসিত সংস্থার(স্ট্যাটুটরি কমিশন) কর্মীদের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতাভুক্ত করার নির্দেশিকা জারি করল অর্থ দফতর।
অর্থ দফতরের প্রকাশ করা নির্দেশিকায় রাজ্য মানবাধিকার কমিশন সহ ১৩টি স্বশাসিত সংস্থার উল্লেখ করা হয়েছে। যাতে রয়েছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন, রাজ্য ইলেকশন কমিশন, স্কুল সার্ভিস কমিশন, কলেজ সার্ভিস কমিশন, মাইনরিটি কমিশন, হেরিটেজ কমিশন, মহিলা কমিশন ইত্যাদি। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১৩টি তালিকার বাইরেও কোনও দপ্তরের অধীনস্থ কোনও স্ট্যাটুটরি কমিশন থাকলে তার কর্মীরাও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আসবে। কমিশন আরও জানাচ্ছে, স্বশাসিত সংস্থার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতায় আসবেন। তবে সরকারি দপ্তর থেকে ডেপুটেশনে আসা কর্মীরা এই প্রকল্পে থাকবেন না। কারণ ডেপুটেশনে আসা কর্মীরা রাজ্য সরকারি কর্মীদের স্বাস্থ্য প্রকল্পের সুবিধা পান।
রাজ্য সরকারের দপ্তরে কর্মরত স্থায়ী কর্মীদের জন্য যে স্বাস্থ্য প্রকল্প আছে, তাতে কিছু নথিভুক্ত হাসপাতলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে এখনও অনেক নথিভুক্ত হাসপাতাল এই সুবিধা দেয় না বলে অভিযোগ আছে। ক্যাশলেস সুবিধা না পেলে বা এক লক্ষ টাকার বেশি খরচ হলে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে প্রথমে নিজের থেকে খরচ করতে হয়। তারপরে খরচের বিল পেশ করলে টাকা মঞ্জুর করা হয়। কিছু ব্যয়বহুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমোদন নিয়ে আগাম অর্থ দেওয়া হয় কর্মীকে। সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পে চিকিৎসার খরচের ক্ষেত্রে কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। অবসরপ্রাপ্ত পেনশন প্রাপকরাও সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় আছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকারি কর্মী ও অবসরাপ্রাপ্ত পেনশন প্রাপকদের একটা বড় অংশ এখনও এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করেনি। তাঁদের জন্য নাম নথিভুক্ত করার সময় বাড়ানো হচ্ছে। ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা কম থাকাটা এই অনাগ্রহের মূল কারণ বলে মনে করা হয়। সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত না করলে সরকারি কর্মীরা মাসে তিনশো টাকা করে চিকিৎসা ভাতা পান। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ব্যয়বহুল চিকিৎসায় পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে এখন পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা মিলছে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় থাকা কর্মী সপরিবারে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ পান। নথিভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো যায়। সরকারি দপ্তরগুলিতে অস্থায়ী ও চুক্তিতে নিযুক্ত বিভিন্ন ধরনের কর্মীকে ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় এনেছে সরকার। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য, কেবল অপারেটরদের কর্মী, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় থাকা অস্থায়ী কর্মীরা এর আওতায় আছেন। এই প্রথম সরকারি নিয়ন্ত্রিত সংস্থার স্থায়ী কর্মীদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হল।