বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝার জন্য পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকেই বিধানসভায় দায়ী করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘বামফ্রন্ট সরকারের করে যাওয়া ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধ করার জন্যই মূলত ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে ঋণ নিতে হয়েছে। , বামফ্রন্ট সরকারের সময় যে ঋণের বোঝা রেখে যাওয়া হয়, তার মধ্যে ৮০ হাজার কোটি টাকা স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের’। তবে ঋণের বোঝা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়েছে, তা তথ্য-পরিসংখ্যান সহ এদিন বিধানসভায় বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন অর্থমন্ত্রী। উন্নয়ন খাতে কত খরচ বেড়েছে, তার পরিসংখ্যানও পেশ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকার বিদায় নেওয়ার সময় এক লক্ষ ৯১ হাজার ৮৩৫.৬২ কোটি টাকার ঋণের বোঝা চাপিয়ে গিয়েছিল। এই ঋণের মূলধন ও সুদ শোধ করার জন্য এই সরকারকে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭৪১.৭৯ কোটি টাকার ঋণ গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত (সাত বছর ধরে) নিতে হয়েছে। তাঁর দাবি, সব মিলিয়ে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৭৭.৪১ কোটি টাকার ঋণের জন্য পূর্ববর্তী সরকার দায়ী। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুরনো ঋণের বোঝা ও তা শোধ করার জন্য নেওয়া নতুন ঋণ ও বর্তমান সরকারের নেওয়া স্বল্প ঋণ মিলিয়ে মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার ১৩৬.৮৬ কোটি টাকা।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আলোচনার সময় বিরোধীরা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, এখন ঋণ পরিশোধ করার জন্য যে পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে তার মধ্যে কতটা বাম সরকারের সময়ে নেওয়া ঋণের জন্য আর কতটা এই সরকারের আমলে নেওয়া ঋণের জন্য। বছরে এখন ঋণ পরিশোধের জন্য সরকারের প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। অমিতবাবু জানিয়েছেন, প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা সরকার ঋণ নিয়েছে উন্নয়নের কাজের জন্য।
অর্থমন্ত্রী বিধানসভায় বলেন, ই-গভর্ন্যান্স, ই-টেন্ডারিং সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে সরকারের আয় বেড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারও এই সাফল্যের বিষয়টি স্বীকার করেছে ও পুরস্কার দিয়েছে। পরিকল্পনা খাতে খরচ বামফ্রন্ট সরকারের সময়কার ১১ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা থেকে প্রায় পাঁচগুণ বেড়ে ৫৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। মূলধনী খাতে ব্যয় বা ক্যাপিট্যাল এক্সপেন্ডিচার এই সময়ে প্রায় সাড়ে আটগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২২২৫ কোটি টাকা থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অর্থনীতির অন্য সূচকের ক্ষেত্রেও যে উন্নতি হয়েছে, তার পরিসংখ্যান দেন অর্থমন্ত্রী।