কেন যে তাকে জনদরদী নেত্রী বলা হয়, তাঁর প্রমাণ আবারও দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যের নমশূদ্রদের উন্নয়নের জন্য পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে আসামে এনআরসির প্রতিবাদে তাঁদের আন্দোলনে মমতা পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দেওয়াতেও আপ্লুত তাঁরা।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর নমশূদ্রদের উন্নয়নের জন্য পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের খবর জানিয়েছেন নমশূদ্র বিকাশ পরিষদের কার্যনির্বাহী সভাপতি মুকুলচন্দ্র বৈরাগ্য। এই মুহূর্তে দেশজুড়ে বাঙালি রক্ষায় মমতাই মুখ বলেও দাবি করেন মুকুলবাবু। তিনি আরও বলেন, ‘সারা রাজ্যে ২ কোটি ৮৭ লক্ষ নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। বোর্ড হলে এঁদের উন্নয়ন হবে।’
সূত্র থেকে পাওয়া খবর, ৬ আগস্ট নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নমশূদ্রদের জন্য পর্ষদ গঠনের দাবি তুলে ধরা হয়েছিল। গতকাল তাই উত্তরকন্যায় আদিবাসীদের উন্নয়ন নিয়ে ট্রাইবাল অ্যাডভাইসরি কাউন্সিলের একটি বৈঠকও হয়। সেখানে আদিবাসীদের উন্নয়ন সংক্রান্ত দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সদর্থক পদক্ষেপ করেছেন বলে দাবি সকল আদিবাসী নেতৃত্বের।
জলপাইগুড়ির টিয়াবন থেকে গতকালই উত্তরকন্যায় এসে পৌঁছান মমতা। এবং তারপর সরাসরি বৈঠকে যোগ দেন। জানা গেছে, এনআরসি প্রসঙ্গেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই আন্দোলনে নেমেছে নমশূদ্র বিকাশ পরিষদ। এ নিয়ে আলিপুরদুয়ারের আসাম সীমান্তে তাঁরা লং মার্চও করেছেন।
সংগঠনের অভিযোগ, এনআরসির পর আসামে বাঙালিরা থাকতে পারছেন না। গত দু’মাসে অন্তত ১৮ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে অনেকে সরকারি কর্মচারী। যাঁদের আসামে জন্ম তাঁদের নামও এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রীতিমতো তথ্যপ্রমাণ-সহ বাঙালিদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন বৈঠকে যোগ দেওয়া সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে আসাম সফরের আর্জিও জানান। নমশূদ্র বিকাশ পরিষদের আশাপাশি গতকালের বৈঠকে ছিল আসামের বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনও।